বিদ্যালয়ে নিয়মিত সঠিক ভাবে হয় না ক্লাস। বিদ্যালয়ের ভেতরে ন্যায্য মূল্যের দোকান করেছেন শিক্ষকরা। ক্লাস না করিয়ে সেখানে বসানো হয় ছাত্র-ছাত্রীদের। প্রত্যেকদিন সঠিকভাবে প্রার্থনাও হয় না বলে অভিযোগ। এমনকি অভিযোগ জাতীয় সংগীত চলাকালীন বসে থাকেন শিক্ষকরা। ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক আবার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তিনি স্কুলে নিয়মিত আসেন না বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
শুক্রবার শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসতেই তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। বিক্ষোভ চলাকালীন বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে এই বিক্ষোভ বিরোধীদের চক্রান্ত বলে দাবি ওই শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতার। পুরো ঘটনাটিকে ঘিরে তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বন্ধ করে দেওয়া উচিত রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বলে বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপি নেতার। পুরো ঘটনাটিকে নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের হলদিবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মানিক দাস, যিনি আবার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি। তার বিরুদ্ধে অভিভাবকদের অভিযোগ, তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। ওই বিদ্যালয়েরই অন্য এক শিক্ষক হিমাংশু দাস এবং তার স্ত্রী পিংকি দাস আবার বিদ্যালয়ের ভেতরে দোকান খুলেছেন বলে অভিযোগ। তারা ক্লাস না নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের দোকানে বসায়।
যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে মিড-ডে মিল দেওয়া হয় সেখানে সেই বিদ্যালয়ের ভেতরে দোকান কেনও প্রশ্ন তুলছে অভিভাবকরা। অভিভাবকদের দাবি, এমন বিদ্যালয়ে এসে বাচ্চারা কি শিখবে, এমনকি তাদেরকে দিয়ে বিদ্যালয়ের ঘরগুলিতে ঝাড়ও দেওয়ানো হয় বলে আটক। শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে থেকে তাদেরকে ঝাড় দেওয়ায়। বিদ্যালয়ে নিয়ম মতো ক্লাস না হওয়ায় প্রাইভেট টিউশনে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অভিভাবকেরা। দীর্ঘদিন ধরে জমতে থাকা এই ক্ষোভের শুক্রবার বিস্ফোরণ ঘটে। তৃণমূল নেতা তথা ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মানিক দাস বিদ্যালয়ে ঢুকতেই তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিভাবকরা। কিন্তু মানিক দাসের দাবি, এই সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন। যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তারা বিরোধী দলের সঙ্গে যুক্ত।
উল্লেখ্য, বিক্ষোভ চলাকালীন বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাদিকুল হক। এব্যাপারে প্রতিক্রিয়ার জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে এই ঘটনায় শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ করেছে বিজেপি নেতা কিষান কেডিয়া। তিনি বলেন, স্কুলে ক্লাস হচ্ছে না। ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে বিদ্যালয়ের ঘরগুলি ঝাড় দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বন্ধ করে দেওয়া উচিত রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। তৃণমূল সব শেষ করে দিচ্ছে। তৃণমূল আমলে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তার।
ফোর্টিন টাইমলাইন, মালদা।