রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী কিংবা তাদের পরিবারের সদস্যদের ওয়ার্ড বয় খুঁজতে গিয়ে হয়রান হতে হয় বলে অভিযোগ। ট্রলিতে চাপিয়ে বিভিন্ন তলায় কিংবা ওয়ার্ডে রোগ বিনিময়ে গুনতে হয় ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। ওপিডি লাইন থেকে ট্রলি পেতেও রোগী বা তাদের পরিজনদের মাসুল গুনতে হয়। এটাই হল রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগী পরিষেবার নমুনা।
সূত্রের খবর, বর্তমানে রায়গঞ্জের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সর্বত্রজুড়ে দালালচক্রের দৌরাত্ম্য চলে। টাকার বিনিময়ে এখানে কাজ চলতে থাকে। হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে রোগীদের ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হুইল চেয়ার পরিষেবা আরও বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়ার জন্য টাকা দিতে হয়। সেই ট্রলি বা হুইল চেয়ার কেনার জন্য ২০ থেকে ৩০ টাকাও রোগী পরিজনদের দিতে হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই মূলত টাকার বিনিময়ে ট্রলি কেনার ঘটনা বেশি চোখে পড়ে। বেশি রাত হলে ট্রলির দাম ২০-৩০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকাও হয়ে যায়।
দূর-দূরান্ত থেকে কোনও রোগীপক্ষ তাদের রোগীকে নিয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করতে এলে তো কথাই নেই! তারা দালালদের ফাঁদে আরও ভালোভাবে পা দিয়ে দেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসার কারনে হাসপাতালের কোথায় কোন পরিষেবা পাওয়া যায়, তা তাদের জানা থাকে না। এর ফলে তাদের বাধ্য হয়েই পরিষেবা পাওয়ার জন্য দালালদের হাতে টাকা তুলে দিতে হয়। রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বর্তমানে দালালদের দৌরাত্ম্য এতই বেড়ে চলেছে যে হাসপাতালে ঢুকতে তাদের কোনও বাধা দেওয়া হয় না। এর সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি কোনোভাবে জড়িত? তা নিয়েও উঠে এসেছে নানান প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যখন দালালচক্র নিয়ে সোচ্চার, ঠিক সেই সময় উল্টো চিত্র দেখা গেল রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। মঙ্গলবার এই হাসপাতালে এক রোগীর পকেট থেকে ১৯ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। পাশাপাশি হাসপাতালের ভিতর থেকে এক রোগীর আত্মীয়ের কাছ থেকেও প্রায় ১২ হাজার টাকা খোয়া যায়। এদিন হাসপাতাল থেকে রোগীপক্ষদের কাছ থেকে মোট ৩১ হাজার টাকা খোয়া গেছে। এমন পরিস্থিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রোগী-সহ তাদের আত্মীয়রা। এবিষয়ে এই হাসপাতালের এমএসভিপি প্রিয়ঙ্কর রায় সাংবাদিকদের জানান – এবিষয়ে তারা কিছু জানেননা। তাদের কাছে কোনও অভিযোগও আসেনি। রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক বলেন, হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে থানায় অভিযোগ জানানোর জন্য অনুরোধ করেন তিনি। অন্যদিকে, হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগরওয়ালা জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তবে বিষয়টি যে উদ্বেগের তা বলাই বাহুল্য।
ফোর্টিন ওয়েবডেস্ক, রায়গঞ্জ।