নববধূকে বাড়িতে তুলে নেওয়ার দাবিতে ছেলের বাড়ির সামনে অবস্থানে বসল। খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ মেয়েটিকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে অবস্থান থেকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালালেও সেই চেষ্টা পুলিশের ব্যর্থ হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামপুর থানার যকতাগাঁও এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্রের খবর, ইসলামপুর থানার মাটিকুন্ডা -২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মরিচবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ডলু সিংহের মেয়ে আরতি সিংহের সঙ্গে দীর্ঘ দেড় বছর যাবদ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ওই পঞ্চায়েতের যতগাঁও গ্রামের বাসিন্দা জুলিয়ান দাসের ছেলে প্রশান্ত দাসের। প্রশান্ত দাস পেশায় লরিচালক। আরতি ইসলামপুরের আই সি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। মঙ্গলবার প্রশান্ত তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। আরতি বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় নগদ টাকা এবং বেশ কিছু স্বর্ণালংকার নিয়ে চম্পট দেয়। প্রশান্ত তাকে নিয়ে চোপড়া থানার দাসপাড়ায় পিসির বাড়িতে আসে। সেখানে একটি মন্দিরে তারা বিয়ে করে। বিয়ের পরই প্রশান্ত জানায়- পিসির বাড়িতে তাদের রাখতে চাইছে না। ইসলামপুরে বাড়ি ভাড়া করে সংসার করবেন বলে মিথ্যা কথা বলে তাকে নিয়ে মাটিকুন্ডায় চলে আসেন। মাটিকুন্ডায় একটি দোকানে এক অপরিচিত ব্যাক্তির সঙ্গে তাকে রেখে অন্যত্র যাবার চেষ্টা করে প্রশান্ত। আরতি অপরিচিত ব্যক্তির কাছে থাকতে রাজি না হয়ে তার পিছু নেয়। অটো করে অন্যত্র যাওয়ার সময় আরতিকে টোটো থেকে নামিয়ে গা ঢাকা দেয়। আরতির নগদ টাকা,স্বর্ণালংকার এবং মোবাইল ফোন নিয়ে প্রশান্ত চম্পট দিয়েছে বলে আরতি জানিয়েছে। অন্য ফোন থেকে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। বাধ্য হয়েই বুধবার সে প্রশান্ত বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছে। আরতির অভিযোগ, প্রেমে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল প্রশান্ত। সেই চক্রান্ত ভেস্তে যাওয়ায় তার টাকা, সোনার গহনা এবং মোবাইল নিয়ে চম্পট দিয়েছে। প্রশান্ত তাকে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। তাকে শ্বশুরবাড়িতে আশ্ররের দাবিতে শ্বশুর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছেন। তার পরিবার লোকেরা একাধিকবার প্রশান্তের সঙ্গে সম্পর্ক করতে বারণ করেছিলেন। অবিভাবকদের বারণ উপেক্ষা করে প্রশান্তের সঙ্গে সম্পর্ক করেছিল। অবিভাবকদের অনুমান- আজ সত্য হল বলে আরতি মনে করছেন। যতক্ষণ না তাকে শ্বশুরবাড়িতে তোলা না হচ্ছে ততক্ষণ তিনি ধর্না চালিয়ে যাবেন। বাড়ির সামনে ধর্নার খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ তাকে আইনি পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেও আরতি পুলিশের প্রস্তাবের রাজি হননি। প্রশান্তের মা জানিয়েছেন, বুধবার সকাল থেকে মেয়েটি বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছে।ধর্নার খবর পেয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা পৌঁছয়। মেয়েটির সঙ্গে তার ছেলের কোনও সম্পর্ক আছে তা তারা জানেন না বলে জানিয়েছেন প্রশান্তের মা নীতা দাস।
অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামসুন্দর সিংহ জানিয়েছেন, মেয়েটি সকাল থেকে প্রশান্তের বাড়ির সামনে বসে আছেন। প্রশান্ত তাকে বিয়ে করেছে বলে মেয়েটি দাবি করেছেন। প্রশান্তের পরিবার মেয়েটিকে বাড়িতে না তুলে নিলে প্রতিবেশীরা তাকে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে উত্তম পালের রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।