গাজোল-ডালখোলা রেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ায় ক্ষেত্রে কি কি সমস্যা রয়েছে তা জানতে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীদের হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজাশেখর ভরোদ্দাজ। আদালতের এই নির্দেশে বিকল্প রেলপথের নতুন করে আশার আলো দেখছেন রায়গঞ্জের আমজনতা।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে মালদা জেলার গাজোল থেকে ডালখোলা ভায়া রায়গঞ্জ, ইটাহার রেল প্রকল্প হাতে নিয়েছিল কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রক। ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথের জন্য কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রককে ২৭৩ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন ছিল। ২০১৮ সাল পর্যন্ত রেল মন্ত্রক ১০০ একর জমি অধিগ্রহণের পর প্রকল্প বন্ধ করে দেয়। সারা দেশে রেল সম্প্রসারিত হলেও এই প্রকল্প বাস্তবায়িত না হওয়ায় উত্তর দিনাজপুর জেলার মানুষকে চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। পশ্চিম দিনাজপুর জেলা ভাগ হয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা গঠিত হলেও শিল্প স্থাপনের অগ্রগতি ঘটেনি। রায়গঞ্জের মানুষকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে যেতে হলে মালদা, ডালখোলা কিংবা বারসই থেকে ট্রেন ধরতে হয়। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও রায়গঞ্জের রেল পরিষেবার উন্নতি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ মহকুমার মানুষ। আজও ইটাহার ব্লকের মানুষ রেল পরিষেবা থেকে বিচ্ছন্নই থেকে গেছেন। গাজোল ডালখোলা ভায়া রায়গঞ্জ,ইটাহার নয়া রেল-লাইন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিকল্প রেল পরিষেবা পাবেন উত্তর দিনাজপুর জেলার মানুষ। ফলে বন্যার কারনে বিহার এলাকায় রেল লাইনের ক্ষতি হলে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষ গাজোল ডালখোলা নামের নতুন রেল লাইনটিকে ব্যবহার করতে পারবেন। বন্ধ থাকা রেল প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে রায়গঞ্জের ব্যাবসায়ী রঞ্জন রায়-সহ শতাধিক মানুষ হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার এই মামলাটি বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজা শেখর ভরোদ্দাজের ব্রেঞ্চে শুনানী হয়। অঞ্জনবাবুর আইনজীবী কল্যান চক্রবর্তী জানান, গাজোল ডালখোলা ভায়া রায়গঞ্জ, ইটাহার রেল প্রকল্প ২০০৩ সালে কাজ শুরু হয়েছিল। ৮০ কিলোমিটার এই প্রকল্পের জন্য ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল ভারতীয় রেল মন্ত্রক। ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই কাজ চালু ছিল। তারপর রেল মন্ত্রক এই প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়। অঞ্জনবাবুর আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পরই কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রকের আইনজীবী এবং রাজ্য সরকারের আইনজীবীর কাছে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি উভয়পক্ষে হলফনামা দিয়ে প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ পরিস্থিতি জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতির এই নির্দেশে খুশি রায়গঞ্জের ব্যবসায়ী মহল। অঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, গাজোল ডালখোলা রেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জেলায় শিল্পের উন্নতি ঘটবে। এছাড়াও ব্যবসা বানিজ্যে ব্যাপক উন্নতিসাধন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা থেকে উত্তম পালের রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা