Jalpaiguri :কালো নুনিয়া ধান চাষের অন্য দিগন্ত জলপাইগুড়িতে

আরও পড়ুন

জলপাইগুড়ির কদমতলা মোড়ের কাছে সকাল এগারোটা থেকে অনেকেই অপেক্ষা করেন এক চাল বিক্রেতার জন্য।

আসিফ মহম্ম ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তের অমরখানা গ্রাম থেকে শহরে আসেন। সাইকেল চালিয়ে গ্রাম থেকে শহরে আসতে ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগে। প্রতিদিন কালো নুনিয়া চাল নিয়ে শহরে বিক্রি করতে আসেন। ১৫ থেকে ২০ কেজি নিমেষে উধাও। ১০০ টাকা কেজি সেই নুনিয়া চাল। স্মৃতির জলপাইগুড়ি শহরে যার খোঁজ করেছিলেন রাজ্যপাল। আসিফের চালের জন্য অপেক্ষায় থাকেন শহরের অনেক মানুষ।

কাঁচা রাস্তা ধরে শনিবার পড়ন্ত বিকেলে সেখানে পৌঁছে চোখে পড়ল বাড়ি আসলে ভাঙা কুটির। আসিফের স্ত্রী সঞ্জিনা খাতুন, ছেলে তজরুল মহম্মদ, আগুন মহম্মদরা ধান থেকে চাল তৈরি করে বাড়ির উঠোনে শুকোতে দিয়েছেন। সঞ্জিনাকে বলতে শোনা গেল, এবার ধান ভালো হয়েছে। নুনিয়া চালের সুগন্ধ ক্রেতাদের টানছে। আমরা শুধু কালো নুনিয়া চাল করছি না। সঙ্গে লাউ এবং কলার চাষ করে মোচার ব্যবসা করছি।

কথা শুনে বোঝা যায়, তিন মাসের পর এই ধান না থাকলে সবজি চাষেই মনোযোগ দেন এরা। সঞ্জিনার কথায়, আমি নিজে ধান মাড়াই করি। আমার স্বামী কালো নুনিয়া বিক্রি করে। বাড়িতে মুরগির ছানা রয়েছে অনেকগুলি। কালো নুনিয়ার ভাঙা অংশ মুরগির ছানাগুলো খুঁটে খুঁটে খাচ্ছিল। এই দৃশ্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছিল আসিফের ছেলেরা।
আসিফের মুখের হাসিতে তপ্তির সঙ্গে যন্ত্রণাও, অমরখানা থেকে জলপাইগুড়িতে প্রতিদিন আসতে খুব কষ্ট হয়। কারণ বাড়ির রাস্তা কাঁচা। কাঁচা রাস্তার অংশ বেশি হওয়াতে টোটো চালকরা সব সময় গাড়ি নিয়ে ঢুকতে চান না। যার ফলে চালের বস্তা মাথায় করে ক্যাম্পের হাটে এসে টোটো ধরতে হয়।

হিসেব দিচ্ছিলেন আসিফ, আমার পথের খরচ দৈনিক প্রায় ৪০০ টাকা। টানাটানির সংসার। এই সংসারে কালো নুনিয়া আমার এখন ভরসা। গত ১৮ বছর ধরে এই ধান চাষ করছি। এবারে চাষের সাফল্য বেশি। জলপাইগুড়ি জেলার কালো নুনিয়া রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হওয়ায় আমি এই ধান চাষের জন্য বেশি আগ্রহী।

ফোর্টিন টাইমলাইন, জলপাইগুড়ি।

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close