গ্রীষ্মের এই দাবদাহে নিজেকে সুস্থ এবং ঠান্ডা রাখতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি কিছু শরবত খাওয়ার চল রয়েছে সব জায়গাতেই। শরবত বলতে মূলত ফলের রসই পান করা হয়। এছাড়াও, দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের কেনা পানীয় যেমন- অরেঞ্জ স্কোয়াশ, রুহ আফজা এসব খেতেও পছন্দ করেন অনেকেই। তবে, এগুলো স্বাদের দিক থেকে লোভনীয় হলেও, এদের পুষ্টিগুণ কতটা তা সঠিক জানা যায়না। কিন্তু, ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি বিভিন্ন ফলের রসের শরবত স্বাদের দিক থেকে যেমন লাজওয়াব, তেমনই এদের পুষ্টিগুণও রয়েছে পুরো মাত্রায়। দেখে নিন কিছু ঘরোয়া শরবত তৈরির প্রণালী।
বাংলার এক সাবেকি শরবত হল গন্ধরাজ ঘোল৷ ভারতের অন্যান্য প্রদেশে যেমন লস্যি, ছাঁচ, বাটার মিল্কের প্রচলন রয়েছে তেমনই বাংলার এক জনপ্রিয় পানীয় হল এই গন্ধরাজ ঘোল। এই শরবতের স্বাদ, গন্ধ অতুলনীয়। এক গ্লাস ঠান্ডা জলে টক দই, গন্ধরাজ লেবু, চিনি, বিট নুন এবং লেবুর পাতা সহযোগে খুব সহজ পদ্ধতিতেই তৈরি করে ফেলা যায় গন্ধরাজ ঘোল।
যাদের লো প্রেশার রয়েছে তারা এই গরমে দিনে বেশ কয়েকবার নুন চিনির শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীরে জলের ভারসাম্য যেমন বজায় থাকবে, পাশাপাশি এতে শরীরের যাবতীয় খনিজ পদার্থের ভারসাম্যও বজায় থাকে।
এই গরমে বেলের শরবত যেমন এক সুস্বাদু পানীয় তেমনই এটি স্বাস্থ্যকরও বটে। বেলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। বেল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও বেল খুব উপকারী। গরম কালে দইয়ের ঘোলও শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। দই, চিনি দিয়ে খুব সহজেই বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায় ঘোল। প্রয়োজনে এতে লেবুর রসও দিতে পারেন। এছাড়া দই দিয়ে লস্যিও বানিয়ে ফেলতে পারেন বাড়িতে।
গরমের সময় তরমুজ একটি অতি সহজলভ্য ফল। তরমুজ শরীরের ওজন কমাতে খুব সাহায্য করে। ওজন কমানোর ব্যাপার থাকলে শরবতে চিনি মেশাবেন না৷ এতে শরবত ফ্যাট যুক্ত হয়ে যাবে৷ গরমে হজমের ক্ষমতা বাড়াতে এবং পেটকে ঠান্ডা রাখতে ছাতুর শরবতের বিকল্প নেই। এক গ্লাস জলে ছাতু দিয়ে তাতে মিষ্টি হিসেবে চিনি বা গুড় দিয়ে, অথবা নুন, লেবুর রস সহযোগেও বানিয়ে ফেলতে পারেন ছাতুর শরবত।
খেতে পারেন কাঁচা আম অথবা আম পোড়া শরবতও। কাঁচা আম, বিট নুন, চিনি, এবং বরফ কুচি দিয়ে তৈরি এই শরবতের জুড়ি মেলা ভার। জলজিরার শরবতও খুব উপকারী এই গরমে। জলজিরা মূলত শরীর থেকে টক্সিন দূর করে৷ পাশাপাশি ওজন কমাতে সহায়তা করে। শরীরে জলের চাহিদা মেটায় জলজিরা। খেতে পারেন তেঁতুলের শরবতও। যারা পাকা তেঁতুল খেতে ভালোবাসেন তাদের জন্য তো এটি খুবই লোভনীয় এক পানীয়। তেঁতুল, আখি গুড়, পুদিনা পাতা, বিট নুন, লেবুর রস, বরফ কুচি দিয়ে তৈরি করে ফেলতে পাতেন তেঁতুলের শরবত। তেঁতুল শরীরের ডায়াবেটিস বা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।