শেষ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে এসেছিল প্রায় এগারোশো কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তার থেকেও বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে এই রাজ্যে এমনটাই ঈঙ্গিত জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। কারন, জাতীয় নির্বাচন কমিশন ২০১৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব নির্বাচনের সব তথ্য সংগ্রহ করে রেখেছে। যার ভিত্তিতেই কমিশনের এই ঈঙ্গিত। বিশেষতঃ সম্প্রতি রাজ্যে শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর তাতে যে ছবি ধরা পড়েছে তা গোটা দেশবাসীর কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে- আদপে রাজ্য প্রশাসন কি করেছে। সেই নিরিখেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন এখন থেকেই কোমড় বাঁধতে শুরু করেছে। যেনও রাজ্যের মানুষ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিজের ভোট নিজেই দিতে পারেন স্বাধীনভাবে। আর তার জন্য যা যা করার দরকার এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন সেটা করার জন্য সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেষ তিন বছরের উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা থেকে শুরু করে সবকিছুই নিজেদের হাতের মুঠোয় রেখেছে কমিশন। রাজ্যে এই মুহূর্তে বুথের সংখ্যা ৮০ হাজার ৪৫৩টি। ইতিমধ্যেই সেই সব বুথের চিহ্নিতকরণের কাজ শেষ করে ফেলেছে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। চলছে এখন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ। চলতি মাসের শেষ দিকে ডেপুটি নির্বাচন কমিশনারের আসার কথা আছে এই রাজ্যে এবং ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে কমিশনের ফুল বেঞ্চ আসার কথা রয়েছে। কমিশন এখন থেকেই প্রতিনিয়ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ড. আরিজ আফতাবের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে ও সব রিপোর্ট তৈরি ও সংগ্রহ করছে।
লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তারপরই কমিশন এবার যে ভূমিকা নিতে চলেছে, তাতে অনেকেই একদিকে যেমন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে বারবার ভাববেন অন্যদিকে যারা চান নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে তাঁরা এবার স্বাচ্ছন্দে ভোট দিতে পারবেন। গোটা দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের ওপর বিশেষভাবে নজরদারি করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যে ভূমিকা রাজ্যের মানুষ দেখেছেন, শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারপর একরকম নির্বাচন কমিশনের ওপর থেকে সব ভরসাই চলে গিয়েছে। এখন সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচন কমিশন সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে কতটা সক্ষম হয় সেটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন।
কলকাতা থেকে নিজস্ব প্রতিনিধির রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।