এবার ঠিক কোনদিকে যেতে চলেছে প্রশান্ত কিশোরের রাজনৈতিক পরিকল্পনা, তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সম্প্রতি, গত সপ্তাহে কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। সেই আলোচনা তেমন ফলপ্রসূ হয়নি বলে সূত্রের খবর। ২ মে অর্থাৎ আজ হঠাৎই তাঁর করা একটি ট্যুইট সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা রাজনৈতিক মহলে।
ট্যুইটে তিনি সরাসরি জানিয়েছেন, নিজের একটি নতুন দল গড়তে চলেছেন প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে। দলের নাম ‘জন সুরজ’। তিনি জানান, তাঁর এই দলের যাত্রা শুরু হবে বিহার থেকে। ট্যুইটে এই বিষয়ে তিনি লেখেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করে জনমুখী নীতি প্রণয়নে সাহায্য করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। তাতে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নানা চড়াই উতরাইয়ের সম্মুখীন হয়েছি। এবার আসল মানুষদের কাছে পৌঁছানোর সময় এসে গিয়েছে। তারা হলেন সত্যিকারের ঈশ্বর অর্থাৎ সাধারণ মানুষ। জন সুরজ তথা সুশাসনের বিষয় নিয়ে তাদের থেকে ভালো আর কে বোঝে!”
উল্লেখ্য, এর আগে বহুবার প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন যে তিনি সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতে নামতে চান। বলা চলে, সেই বিষয় নিয়েই সম্প্রতি কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা সারেন পিকে। দফায় দফায় সোনিয়া গান্ধী সহ একাধিক কংগ্রেস নেতার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। প্রশান্ত কিশোরের ব্যাপারে অনেক রাজনীতি বিশেষজ্ঞরাই মনে করেছিলেন যে, এবার পিকে নিজেই একটি রাজনৈতিক দল খুলে সরাসরি নির্বাচনের লড়াইতে অংশগ্রহণ করবেন। অনেকে আবার ভেবেছিলেন যে, আপাতত ভোটকুশলী হিসেবেই নিজের কেরিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন প্রশান্ত। তার কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তৃণমূলের ভোটকুশলী হিসেবে প্রশান্তই নিযুক্ত রয়েছেন।
অন্যদিকে, এবার প্রশ্ন উঠেছে যে, এই মুহুর্তে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার একটি চুক্তি রয়েছে৷ তৃণমূলের সঙ্গে ২০২৪ সালের লোকসভা এবং ২০২৬ সালে বিধানসভার নির্বাচন পর্যন্ত তাঁর কাজ করার কথা রয়েছে। সেই জন্যেই আগামী দিনে প্রশান্ত কিশোর কি নিজের দলেই মনোযোগ দেবেন নাকি তার পাশাপাশি ভোটকুশলীর কাজও সক্রিয় ভাবে চালিয়ে যাবেন, তা নিয়ে আরম্ভ হয়েছে জল্পনা।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রশান্ত কিশোর নীতিশ কুমারের জেডিইউর গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে ছিলেন। তাঁর নির্বাচনী কৌশলের উপর ভিত্তি করে জয়লাভও করেন নীতিশ কুমার। তবে, জয়লাভের পর নীতিশ কুমার মোদী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ায় এবং মোদী সরকারের সমালোচনা করার জন্য জেডিইউর পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল প্রশান্ত কিশোরকে। সেই সময়েই প্রশান্ত জানিয়েছিলেন যে, এটাই তাঁর বিহার রাজনীতির শেষ নয়।