গ্রীষ্মকাল এলেই মাথায় হাত পরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের কৃষকদের। কারন জলস্তর এতটাই নেমে যায় যে পাম্প মেশিন বসিয়েও জল তোলা যায় না। কেউ কেউ আবার ২০-২৫ ফিট গর্ত খুরে তার মধ্যে পাম্প মেশিন বসিয়ে ধান চাষের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। হেলদোল নেই প্রশাসন থেকে শুরু করে নেতা মন্ত্রীদেরও। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বাক বিতন্ডা। চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। চাষের জমির মাটি ফেটে কাঠ হয়ে গিয়েছে। আর এই সময়ই ইটাহারের চাষিদের সবচাইতে অর্থকরী ফসল বোরো ধান বোনার সময়। শুধু বোরো ধানই নয়, চল্লিশ চুরানব্বই, সুপার মিনিকেট জাতীয় হাইব্রিড ধানের চারাও রোপন করা হয়। কিন্তু বাধাস্বরূপ সামনে আসে চরম জলের অভাব। এই অভাব সাময়িক নয়।
দশকের পর দশক ধরে এই সমস্যা ঝেলে আসছেন এখানকার কৃষকেরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীরা শুধু আশ্বাসই দিয়ে যান। ফল মেলেনা বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। কৃষকেরা বলছেন সরকার সহযোগীতার হাত বাড়াক। নইলে আগামীতে আরও কঠিন সমস্যার মধ্যে দিন কাটাতে হবে তাদের। তবে স্থানীয় বিধায়ক সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীর কাছে জানিয়েছেন। খরা কেটে গেলে এইসব এলাকায় লাইট ডিউটি, মিডিয়ম ডিউটি টিউবওয়েল ও সাব মার্সিবল পাম্প বসানোর আবেদন জানিয়েছেন।
আর বিজেপির করা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, একশো দিনের কাজের মাধ্যমে পুকুর খুঁড়িয়ে সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে। জল স্বপ্নেরর মতো প্রকল্প হাতে নিয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার।
যদিও বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করে বিজেপি জেলা সভাপতি বলেছেন, রাজ্য সরকারের জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর ও MGNREGA টাকায় পুকুর খননের নামে যে পুকুর চুরি হচ্ছে তারই মাশুল দিচ্ছেন এখানকার কৃষকেরা। অন্যদিকে, জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, যেহেতু এই গ্রীষ্মকালে ইটাহারের বেশ কিছু জায়গায় জলের সমস্যা হয় তাই সেখানকার কৃষকদের কাছে আবেদন রাখছেন, বোরো ধানের চাষে বেশি জল লাগে তাই তার পরিবর্তে ভুট্টা, বাদাম, পাট জাতীয় কম জলের ফসল লাগানোর। পাশাপাশি তিনি বিষয়টি নিয়ে নিজের দফতরের সঙ্গে জেলার জল সম্পদ দফতরের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।
Fourteen Time Line, Itahar, Uttar Dinajpur