মথুরা হল শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি। সব বিখ্যাত তীর্থস্থানের মধ্যে একটি। বহুদিন ধরেই এই পুন্যস্থানে নির্মিত শাহী ইদগাহ মসজিদ নিয়ে বিতর্ক চলছে। মথুরার একটি স্থানীয় আদালতে কিছুদিন আগেই এই মসজিদ সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু, সেই মামলা খারিজ করে দেয় আদালত। তারপরেই সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন অভিযোক্তারা। সেই আপিলের ভিত্তিতে মথুরার জেলা আদালত (Mathura District Court) রায় দিয়েছে, এই মামলার শুনানি শুরু করতে হবে।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এই কৃষ্ণ জন্মভূমি অর্থাৎ মথুরা। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য বারবার সরব হয়েছেন কৃষ্ণ জন্মভূমীতে মন্দির বানানো প্রসঙ্গে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলার শুনানি শুরু হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে এই জায়গাটি নিয়ে। কোথাও বলা হয়েছে মসজিদ সরিয়ে দিতে হবে, আবার কোথাও বলা হয়েছে এই স্থানে হিন্দুদের উপাসনা করতে দিতে হবে। সাম্প্রতিককালে জ্ঞানবাপী মসজিদের শিবলিঙ্গ পাওয়ার ঘটনার পরে ইদগাহ মসজিদেও ভিডিওগ্রাফির দাবি করে মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে মনে করা হচ্ছে, সবকটি মামলার সংযুক্তিকরণের পর হয়তো শুনানি হতে পারে।
সূত্রের খবর, কৃষ্ণ ভক্ত আইনজীবী রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী মামলাটি দায়ের করেছেন। তিনি বলেছেন, “ভগবান কৃষ্ণের উপাসক হিসাবে আমাদের অধিকার আছে এই স্থানের মন্দির সংরক্ষণ করার দাবি জানানোর। কৃষ্ণের জন্মভূমিতে বেআইনিভাবে এই মসজিদ তৈরি হয়েছিল।” জানা গেছে, মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সময়কালে অর্থাৎ ১৬৭০ সাল নাগাদ তাঁর নির্দেশেই ওই মসজিদ তৈরি করা হয়। সেই প্রসঙ্গে রঞ্জনা বলেছেন, “বহু বছর আগে আপস করে এই জমি ভাগ হয়েছিল। কিন্তু, বেআইনিভাবে আপস করা হয়েছিল সেই সময়ে।”
আইনজীবী রঞ্জনা মথুরার আদালতে এ বিষয়ে মামলা দায়ের করলে আদালত তা খারিজ করে দেয়। কারণ হিসাবে ১৯৯১ সালের প্লেসেস অফ ওয়ারশিপ আইনের উল্লেখ করে আদালত। এই আইনে বলা হয়েছিল, ১৯৪৭-এর ১৫ আগস্ট যে ধর্মস্থল যেভাবে উপাসনা ছিল, সেই চরিত্র বদল করা যাবে না। তবে রামজন্মভূমী-বাবরি মসজিদকে ওই আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়।