পরাধীন ভারতবর্ষে ১৭৯৩ সালে অবিভক্ত দিনাজপুর বর্তমানে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের নীলকুঠিতে অবিভক্ত বাংলায় ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উইলিয়াম কেরির বন্ধু টমাস। আর তার সূত্র ধরেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এসে পৌঁছন অবিভক্ত বাংলার ছাপাখানার প্রতিষ্ঠাতা উইলিয়াম কেরি।
সূত্রের খবর,উইলিয়াম কেরি ও তার বন্ধু টমাস দিনাজপুরে কর সাহেব হিসেবে পরিচিত ছিল। তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার করা। পাশাপাশি এই এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়াও তাদের উদ্দেশ্য ছিল বলে ইতিহাসবিদদের কাছ থেকে জানা যায়। অনেকের মতে বাংলায় প্রথম ছাপাখানার প্রতিষ্ঠাতা উইলিয়াম কেরি। তিনি শ্রীরামপুরেও প্রথম ছাপাখানা স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু দিনাজপুরের স্থানীয় ইতিহাসবিদদের মতে- ছাপাখানা স্থাপন করেন দিনাজপুরের কুশমন্ডি এলাকার নীলকুঠিতে।
উল্লেখ্য, পরবর্তীকালে উইলিয়াম কেরির স্ত্রী এবং তার পুত্র ফেলিক্স কেরি প্রয়াত হলে উইলিয়াম কেরি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এবং তিনি তার ছাপাখানার সম্পূর্ণ সেট আপ-টি শ্রীরামপুরে নিয়ে যান। যেখানেই তিনি পাকাপাকিভাবে ছাপাখানার কাজ শুরু করেন। সেই কারণেই অনেকে শ্রীরামপুরে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয় বাংলায় বলে মত প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বাংলায় ছাপাখানার কাজটি প্রথম শুরু হয় অবিভক্ত বাংলার দিনাজপুর জেলার বর্তমান দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের মহিপাল এলাকার মহিপালদিঘির পাড়ে নীলকুঠিতে। আর বাংলা সেই ইতিহাসের সাক্ষ্যই বহন করে চলেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ। তাই বাংলার এই গৌরবময় ইতিহাস যেনও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যায়। সেই লক্ষ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের মহিপাল এলাকার বাসিন্দারা এই নীলকুঠি সংরক্ষণের দাবি রেখেছেন সরকারের কাছে। বর্তমান সরকার যখন বাংলার গৌরবময় ইতিহাসকে সংরক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিহাসের পাতায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অজানা ইতিহাস দাবি জানান দক্ষিণ দিনাজপুরবাসী তথা কুশমন্ডির আপামোর জনতা।