এক মাস যাবৎ যুক্তরাজ্যে বন্ধ ছিল কৃষিপণ্যের রপ্তানি। সূত্রের খবর, স্ক্যানার জটিলতার কারণে বন্ধ ছিল রপ্তানির কাজ। অবশেষে সমস্যার সমাধান হয়েছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের কৃষি পণ্য পাঠানোর জন্য সেদেশের পরিবহন দফতর দ্বারা অনুমোদিত এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন স্ক্যানারের মাধ্যমে স্ক্যান করে পাঠাতে হয়। গত ৯ মার্চ সেই স্ক্যানার যন্ত্রটি বিকল হয়ে পড়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যুক্তরাজ্যে কৃষি পণ্য রপ্তানির কাজ।
এই ঘটনার জেরে বহু ব্যবসায়ীই অসুবিধায় পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘ দিন এই স্ক্যানার বন্ধ থাকার কারণে তারা অনেকেই যুক্তরাজ্যে বাজার হারিয়েছেন, যা পুনরুদ্ধার করা এখন বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্রের খবর, ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে ইউরোপীয় দেশগুলিতে কৃষি পণ্য পাঠানোর জন্য ৪ টি ইডিএস এবং ২ টি এক্স-রে স্ক্যানার রয়েছে। ৪টি ইডিএস-এর মধ্যে ২টি ইডিএস যুক্তরাজ্যের পরিবহন দফতর দ্বারা অনুমোদিত৷ গত এক বছর যাবৎ তার মধ্যে একটি ইডিএস বিকল হয়ে পড়ে আছে। যেই একটি ইডিএস সচল ছিল তা গত ৯ মার্চ বিকল হয়ে পড়ায় দেখা দেয় এই বিপত্তি।
সূত্রের খবর, গত বছর ওই এলাকায় নতুন দুটি ইডিএস বসানো হয়েছিল। তবে, সেগুলো যুক্তরাজ্যের পরিবহন দফতর দ্বারা অনুমোদন না পাওয়ায় তা যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনও কাজে লাগছিল না। এই ঘটনার পর সম্প্রতি যুক্তরাজ্য নতুন দুটি স্ক্যানারের অনুমোদন প্রদান করেছে। গত ৫ এপ্রিল এই খবর সংক্রান্ত মেইল আসার পরে নতুন করে ফের রপ্তানি শুরু হয়েছে বলে শাহজালাল বিমানবন্দরের সদ্য নিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মহম্মদ কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “দুটো স্ক্যানার যুক্তরাজ্য কর্তৃক অনুমোদন পেয়েছে। এখন পুরোদমে কাজ করছে এই স্ক্যানার দুটো। এর মধ্যেই দুটো শিপমেন্ট যুক্তরাজ্যে চলে গিয়েছে।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশের ফুড ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম এ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান যে, “বুধবার থেকে চালু হয়েছে স্ক্যানার, এবং পণ্যও রপ্তানি শুরু হয়েছে। তবে হ্যাঁ, এই কদিনে বাজার বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু বাজার ভারতে গেছে। সেটা এখন পুনরুদ্ধার করা বেশ শক্ত হবে। আমদানিকারক দেশ তো আমদানি কোনো না কোনভাবে করবেই। ওরা তো আর এমনি এমনি বসে থাকবে না।”
যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাবসায়ীরা বলছেন যে, তাদের দোকানগুলোতে বছরে প্রায় ১০ কোটি পাউন্ডের কৃষি পণ্যের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু, বর্তমানে মাত্র সোয়া ৩ কোটি পাউন্ডের কৃষি পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন দেশীয় ব্যবসায়ীরা। আর এদিকে তুরস্ক, আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ সহ অন্যান্য দেশগুলির মানুষের কাছে সবজির বাজার যদি বৃদ্ধি করা যায়, তাহলে তা প্রায় ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডে গিয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।