সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে এবারে কোচবিহারে রাইস ট্রান্সপ্লান্টেশনে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। কম পরিশ্রমে বেশি ধান উৎপাদনের জন্য কৃষকদের এই যান্ত্রিক উপায়ে ধান চাষে আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি দফতর ৷ রাজ্য সরকারের ভর্তুকিতে এই যন্ত্র কেনার সুযোগ পাবেন কৃষকরা। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান জানিয়েছেন, আপাতত কোচবিহার জেলার ১২টি ব্লকের একশোটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এই এলাকায় কৃষকরা আগ্রহ দেখিয়েছেন রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন কিনতে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিও এই মেশিন কিনে তা কৃষকদের ভাড়া দিতে পারবেন ৷ সরকারি ভর্তুকিতে এই রাইসট্রান্সপ্লান্টার মেশিন কেনা যাবে৷ এতে শ্রমিক খরচ ও পরিশ্রম কমবে অন্যদিকে কম খরচে বাড়তি আয়ের সুযোগ পাবেন কৃষকরা৷
জানা গেছে , যান্ত্রিক উপায়ে খেতমজুর ছাড়া ঘন্টায় এক বিঘেপ্রতি জমিতে ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হবে৷ বিঘে প্রতি কৃষকের সাশ্রয় হতে পারে প্রায় আড়াই হাজার টাকা। কৃষি দফতরের প্রধান সচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান-সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের পুন্ডিবাড়ি, তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের বলরামপুর সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছেন । কোচবিহারের ফার্মাস প্রোডাকশন অর্গানাইজেশন ও কৃষি সামগ্রী হায়ারিং সেন্টার থেকে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার কিনে তারা এই আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ করতেও শুরু করেছেন৷ কোচবিহার জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, বছরে কোচবিহার জেলাতে আমন ধান চাষ হয় ২ লক্ষ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে। বোরো ধান চাষ হয় ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে ৷ খেত মজুরের অভাবে ধান চাষে আগ্রহ কমতে শুরু করেছে নতুন প্রজন্মের৷ এছাড়াও প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত খেত মজুর না মেলায় ধান চাষে উৎসাহী কৃষকদের বীজতলা রোপণে দীর্ঘ সময় নষ্ট হচ্ছে । এতে বিঘে প্রতি উৎপাদন কমে যাচ্ছে। তাতেও লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। তবে যান্ত্রিক ব্যবহারে রাইস ট্রান্সপ্লান্টাশন প্রক্রিয়ায় যেমন কম খরচে বাড়তি লাভের পথ খুঁজে পাবেন কৃষকরা তেমনি নতুন প্রজন্ম ধান চাষে আগ্রহ দেখাবে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন৷
ফোর্টিন টাইমলাইন, কোচবিহার।