১৩ মে অর্থাৎ গতকাল মুক্তি পেয়েছে অনীক দত্ত পরিচালিত ছবি ‘অপরাজিত‘। ছবিতে বিশ্ববরেণ্য পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অভিনেতা জীতু কামাল। সত্যজিৎ রায় হয়ে ওঠার পেছনে কি বিরাট পরিশ্রম, সাধনা করতে হয়েছে জীতুকে, সেই গল্প সকলেরই জানা। এই ছবিতে যেহেতু পথের পাঁচালি তৈরির গল্প রয়েছে, তাই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত উপন্যাসের চরিত্র সর্বজয়া, হরিহর, অপু, দুর্গা, ইন্দির ঠাকুরণ সবাই রয়েছে এই ছবিতে। এছাড়াও রয়েছেন পরিচালকের স্ত্রী বিজয়া রায়, ছেলে সন্দীপ রায়, সমালোচক চিদানন্দ দাশগুপ্ত।
গতকাল ছবির মুক্তির পর সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ রায় ছবির প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ছবিতে জীতুকে তাঁর বাবার লুকে দেখে রীতিমতো আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর কথায়, “আবার যেন বাবাকেই দেখতে পেলাম নতুন করে। ছবিটি বেশ মুভিং লেগেছে আমার। যেসব দৃশ্যগুলি নতুন করে পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো ভীষণ ভালো। খুবই ঝামেলার ছবি, সকলের অভিনয়ই আমার খুব ভালো লেগেছে। ছবির কিছু কিছু বিশেষ মুহুর্ত আমার মন ছুঁয়ে গেছে। কিছু কিছু দৃশ্য তো সত্যিই অবিশ্বাস্য, গায়ে কাঁটা দিয়েছে আমার। ছবির লাইটিং বিশেষ মুগ্ধ করেছে আমায়৷ ছবি নিয়ে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট।”
উল্লেখ্য, এই ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে সন্দীপ রায় জানিয়েছিলেন, “জীতুর লুক দেখে আমি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম, অসাধারণ মানিয়েছে ওঁকে। আর, অনীক এর আগে বহুবারই আমার কাছে এসেছে। একসঙ্গে বসে ছবি নিয়ে নানা আলোচনা করেছি আমরা। অনীক প্রচুর খেটেছে এবং রীতিমতো রিসার্চ করে এই ছবি তৈরি করেছে।”
সন্দীপ রায়ের এই প্রশংসার কথা শুনে ছবির পরিচালক অনীক দত্তও বেশ নিশ্চিন্ত হয়েছেন। ছবিটি নিয়ে বেশ টেনশনেই ছিলেন অনীক। এইরকম একটা মানুষের ছবি তৈরি নিয়ে সিনেমা বানানো তো আর চারটি খানি কথা নয়! রীতিমতো গুরুদায়িত্বই নিয়ে ফেলেছিলেন নিজের কাঁধে৷ প্রসঙ্গত, সত্যজিৎ রায় যখন পথের পাঁচালি ছবি করবেন বলে ভেবেছিলেন, সে সময় প্রযোজকরা এই ছবিতে টাকা বিনিয়োগ করতে নাকচ করেছিলেন। সেই কারণেই, কিস্তিতে এই ছবির শ্যুটিং করতে হয়েছিল সত্যজিৎ বাবুকে৷ এই ছবিতে সত্যজিৎ পত্নী বিজয়া রায়ের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে।
তবে, সত্যজিতের জীবন নির্ভর এই ছবি স্থান পেল না নন্দনে। এর আগেও অনীক দত্তের ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ ছবির প্রদর্শনী আটকে দেওয়া হয়েছিল নন্দনে। অনীক দত্তের কথায়, “এই ছবির প্রিমিয়ারের পর যথেষ্ট প্রশংসা করেছিল বিভিন্ন অভিনেতা অভিনেত্রীরা এবং কমিটির সদস্যরা৷ কিন্তু, তারপরেও কেন নন্দনে ছবির প্রদর্শনী আটকে দেওয়া হল তা আমি বুঝতে পারছি না। আমি হতাশই হয়েছি এতে। এই ছবি দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি কলেজে কলেজে গিয়ে ছবির প্রচার করেছি। পড়ুয়াদের উৎসাহিত করেছি এই ছবি দেখার জন্য। কেন এমনটা করা হল আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না।”