আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পাচ্ছেন গীতাঞ্জলি শ্রী

আরও পড়ুন

বুকার মঞ্চে ভারতীয়দের ভারতীয়দের জয়যাত্রা অব্যাহত। এইবার বুকার পুরস্কার জিতে নিলেন হিন্দি ঔপন্যাসিক গীতাঞ্জলি শ্রী। তাঁর রচিত ‘টুম্ব অফ স্যান্ড‘ উপন্যাসটিকে এবার বুকার পুরস্কারে সম্মানিত করা হল। ২০১৮ সালে প্রকাশিত গীতাঞ্জলির ‘রেত সমাধি’ নামক হিন্দি উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ এই ‘টুম্ব অফ স্যান্ড’। বইটি অনুবাদ করেছেন মার্কিন অনুবাদক এবং লেখক ডেইজি রকওয়েল। তাঁর হাত ধরেই ভারতীয় ভাষায় লেখা কোনও বই প্রথম বুকার পুরস্কার পেল।

গীতাঞ্জলি শ্রী

উল্লেখ্য, এই পুরস্কারের জন্য ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড পাচ্ছেন গীতাঞ্জলি। এই বছর ১২ টি দেশের মোট ১১ টি ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা মোট ১৩ টি উপন্যাসকে বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। এই পুরস্কারের জন্য গীতাঞ্জলি যা অর্থ মূল্য পাবেন তা তাঁকে ভাগ করে নিতে হবে অনুবাদকারী ডেইজি রকওয়েলের সঙ্গে। পুরস্কার পাওয়ার পরে গীতাঞ্জলি উচ্ছ্বসিত হয়ে জানান, “কখনওই ভাবতে পারিনি যে বুকারের মতো পুরস্কার পাব। এ এক অনন্য সম্মান। আমি সত্যি অভিভূত। এই উপন্যাসে আমি পাঠকদের জন্য একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, এই পুরস্কারের পর এই বার্তা আরও বহু মানুষের কাছে পৌঁছাবে।”

মূলত ‘টুম্ব অফ স্যান্ডে’ গীতাঞ্জলি শুনিয়েছেন, এক ৮০ বছরের বৃদ্ধার কথা। দেশ ভাগের প্রেক্ষাপট রয়েছে উপন্যাসে। কাঁটাতারের রক্তাক্ত যন্ত্রণা ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। বৃদ্ধা তাঁর স্বামীকে হারানোর পর সংসার এবং সন্তানের আপত্তি উড়িয়ে দিয়ে যেতে চান পাকিস্তানে। উপন্যাসটি ৭২৫ পাতা জুড়ে লেখা হয়েছে। মূলত বলা চলে, এটি এক ছিন্নমূল মানুষের তাঁর শিকড় খোঁজার আখ্যান। আফগানিস্তান থেকে ইউক্রেন। যুদ্ধের কবলে পড়ে কত শত মানুষ যে ঘর ছাড়া হয়েছেন তার কথা তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাসে। এই উপন্যাস পড়তে পড়তে পাঠকরা স্মৃতি মেদুর হয়ে পড়বেন, এবং তাদের ছিন্নমূল ভাবাবেগ জেগে উঠবে নতুন করে।

প্রসঙ্গত, ৬৪ বছরের গীতাঞ্জলির বেড়ে ওঠার সঙ্গে হিন্দি ভাষার যোগাযোগ একাত্ম হয়ে রয়েছে। তাঁর জন্ম হয় উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরীতে, এক আইএএস পরিবারে। বর্তমানে তিনি দিল্লিতে থাকেন। ৫ টি উপন্যাস এবং অসংখ্য ছোট গল্পের রচয়িতা গীতাঞ্জলির প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় ১৯৮০ সালে, জনপ্রিয় হিন্দি পত্রিকা হংস-তে। লেখার ক্ষেত্রে তিনি বরাবরই শান্তি এবং নিস্তব্ধতায় বিশ্বাসী। সম্প্রতি তিনি তাঁর ষষ্ঠ উপন্যাস ‘শাহ-সা’ লেখা শেষ করেছেন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত এই উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তিনি প্রকাশকের কাছে পাঠাননি। 

টুম্ব অফ স্যান্ড

এর কারণ হিসেবে গীতাঞ্জলির কথায়, “কোভিডের সময়কালে এটা আমার উচিত বলে মনে হয়নি। পৃথিবী কবে এই সংকট থেকে নিজেকে পুনরুদ্ধার করতে পারবে? নাকি আমরাই শেষের দিকে এগোচ্ছি! এর উত্তর পাওয়ার পরেই আমি পাণ্ডুলিপিটা প্রকাশকের কাছে পাঠাব।” গীতাঞ্জলির লেখা উপন্যাস, ছোটগল্প ইংরেজির পাশাপাশি অনুবাদ হয়েছে ফ্রেঞ্চ, জার্মান, সাইবেরিয়ান, কোরিয়ান সহ আরও বিভিন্ন ভাষায়। 

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close