যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ইয়াসিন মালিককে

আরও পড়ুন

জম্মু কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিক সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগান এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকায় গত ১৯ মে দিল্লি আদালতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। বুধবার আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনালেন। সেই সঙ্গে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের প্রধানকে জঙ্গিদের অর্থ সাহায্যের অপরাধে ১০ লক্ষ টাকার জরিমানাও করা হয়েছে। গত দুই দশক ধরে কাশ্মীর উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ চলছে ইয়াসিন মালিকের মদতে। 

পুলিশের হেফাজতে ইয়াসিন মালিক

উল্লেখ্য, আজ পর্যন্ত ইয়াসিন মালিকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে আদালতে। ১৯৯৯ সাল থেকে শুরু করে ২০২২ পর্যন্ত টানা এই কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত থেকেছেন তিনি। একাধিকবার পুলিশ গ্রেফতারও করেছে তাঁকে। কাশ্মীরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার ছক কষেছিলেন তিনি। আন ল-ফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট অথবা ইউএপিএ-এর বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ ওঠে ইয়াসিনের বিরুদ্ধে। 

সম্প্রতি, গত ১০ মে ইয়াসিন তাঁর নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ মেনে নেন। তারপরেই ১৯ মে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল্লির এনআইএ আদালত। বুধবার ইয়াসিন মালিক আদালতে বলেন, “কাশ্মীরে বুরহান ওয়ানির হত্যার ৩০ মিনিটের মধ্যে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। আমাকে পাসপোর্ট দিয়েছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। তার জেরেই আমি যে কোনও মন্তব্য করতে পারি। আমি কোনও ক্রিমিনাল নই। অস্ত্র ছেড়ে আমি এখন গান্ধীজির আদর্শ পালন করি।”

ইয়াসিন মালিকের জন্ম হয় শ্রীনগরে ১৯৬৬ সালে। তাঁর অভিযোগ এই ছিল যে, নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরিদের উপর অত্যাচার করে আসছে। তাঁর মনে বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্ম হয় ১৯৮০ সালে এক সেনা এবং ট্যাক্সি চালকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হতে দেখার পর। শ্রীনগরে ন্যাশনাল কনফারেন্সে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, মাকবুল ভাটের ফাঁসির প্রতিবাদের পিছনে ছিল ইয়াসিন মালিকের তালা পার্টি। ১৯৮৬ সালে তালা পার্টির নাম বদলে রাখা হয় ইসলামিক স্টুডেন্টস লীগ। তারা সংবিধানে বিশ্বাস করে না। 

১৯৯০ সালের ২৫ জানুয়ারি শ্রীনগরের রাওয়ালপোরাতে ৪০ জন বায়ুসেনা আধিকারিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ইয়াসিন মালিক এবং তাঁর দলের লোকেরা। ওই হামলায় শহীদ হয়েছিলেন ৪ জন বায়ুসেনা। গত ২০২০ সালে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ প্রতিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ২০১০ এবং ২০১৬ সালে কাশ্মীরে অশান্তির সময় ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। তবে, ১৯৮৪ সালের পর থেকে অস্ত্র ত্যাগ করেন ইয়াসিন। গান্ধীজির অহিংস রাজনীতির পথ বেছে নেন তিনি। ২০২২ সালের মার্চ মাসে দিল্লি আদালতে ইয়াসিন মালিক এবং অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউপিএ-তে মামলা দায়ের হয়। 

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close