করোনার টীকা নিতে কাউকে জোর করা বা বাধ্য করা যাবে না, সোমবার এমনটাই জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফের দেশে করোনা বাড়ছে। পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক না হলেও, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকতে বলছেন দেশবাসীকে। এই অবস্থাতে সুপ্রিম কোর্ট আদেশ জানিয়ে দিল যে কেউ যদি করোনার টীকা না নিতে চান, তবে তাকে কোনও মতেই জোর করা যাবে না, এটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, এদিন করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের ডেটা প্রকাশ করার জন্য এবং দেশের বিভিন্ন অংশে জারি করা ‘ভ্যাকসিন ম্যান্ডেট‘ এর ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার আবেদনের নিষ্পত্তি করে সুপ্রিম কোর্ট। সূত্রের খবর, বাধ্যতামূলক ভাবে কোভিডের টীকা নেওয়া অসাংবিধানিক বলে দাবি করে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। আদালত এদিন জানিয়ে দেয় যে, সরকারি নীতি নিয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে, জোর করে আর কাউকে টীকা প্রদান করা যাবে না। সরকার জনস্বার্থে মানুষকে সচেতন করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য নানা বিধি নিষেধও আরোপ করতে পারে। কিন্তু, তার জন্য মানুষকে নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ বা টীকা নেওয়ার জন্য জোর করতে পারে না।
এর আগে করোনা অতিমারির সময় প্রত্যেক ব্যক্তিকে করোনার টীকা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করেছিল দেশের বেশ কিছু রাজ্য। সেই নীতিই এবার প্রত্যাহার করল সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে, ফের লাফিয়ে বাড়ছে দেশে করোনার দৈনিক সংক্রমণ। করোনার প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে দুটি ভ্যাকসিন ডোজের পর ফের বুস্টার টীকার ডোজ দেওয়াও শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, একইসঙ্গে টীকা নেওয়ার পর কার শরীরে কেমন প্রভাব পড়ছে অথবা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছে কিনা সেই বিষয়ে তথ্য সাধারণ মানুষ এবং চিকিৎসকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তা জনগণকে পরিষ্কার করে জানাতে হবে। সরকারকে বর্তমান টীকানীতি নিয়েও চিন্তা ভাবনা করতে বলেছে আদালত।
প্রসঙ্গত, করোনার প্রকোপে ছোটদের কথা মাথায় রেখে টীকা দেওয়ার ওপর বেশ জোর দিয়েছে কেন্দ্র। সম্প্রতি, ৬-১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের টীকা প্রদান করা শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র। উক্ত বয়সের শিশুদের জন্য ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টীকা প্রয়োগ করার নির্দেশ দেয় ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অফ ইন্ডিয়া। এদিকে, এপ্রিল মাস থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের ব্যক্তিরাও পাচ্ছেন বুস্টার ডোজ।
তবে, সাধারণ মানুষের মনে এখন ঘুরপাক খাচ্ছে একটাই ভয়। ফের করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়বে না তো দেশে! সম্প্রতি, এই চিন্তার অবসান ঘটালো আইসিএমআর (ICMR)। তাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের কোভিড গ্রাফ নিয়ে খুব একটা দুঃশ্চিন্তা কারণ নেই। গবেষকদের কথায়, এই সংক্রমণের হার কোনওভাবেই চতুর্থ ঢেউয়ের ইঙ্গিত নয়। করোনার তৃতীয় ঢেউ ওমিক্রনে বাংলা ছেয়ে গেলেও মৃত্যুহার তেমন বাড়েনি। দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপের তুলনায় অনেকটাই হালকা ছিল তৃতীয় ঢেউ। বলা চলে, এবার করোনার চতুর্থ ঢেউ এলেও মানুষ আর আগের মতো আতঙ্কিত হবে না এবং তারা যথেষ্ট সচেতন হয়েছে।