ভারতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ১২৪ ধারায় নতুন করে কোনও মামলা রুজু করা যাবে না। যাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই এই আইনে মামলা দায়ের করা রয়েছে, তারাও এখন জামিনের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। উল্লেখ্য, গত সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার আদালতের এই বিতর্কিত আইন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল। শীর্ষ আদালত মঙ্গলবার এই আইন পুনর্বিবেচনার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, এই আইনের অধীনে থাকা মামলাগুলি স্থগিত রাখার নির্দেশ জারি করেছিল।
সূত্রের খবর, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী জুলাই মাসে। রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলার শুনানিতে ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানায়, “এই আইনের পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। এই আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। যতদিন না পর্যন্ত আইন পুনর্বিবেচনার কাজ হচ্ছে, ততদিন আইন স্থগিত রাখা হবে।” এদিন শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোনওমতেই এই আইনের অনুশীলন স্থগিত রাখা যাবে না। রাষ্ট্রদোহের মামলা দায়ের এবং দ্রুত জামিনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ব্যাপারে রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, এদিন কেন্দ্র শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছে, এটা সম্ভব নয়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এদিন জানিয়েছেন, “এই আইনের অধীনে ইতিমধ্যেই যে মামলাগুলি দায়ের করা হয়েছে সেগুলো স্থগিত রাখার বিষয়টি পুলিশ কিংবা সরকারের অধিকারের মধ্যে পড়ে না। তার কারণ, এই মামলাগুলির শুনানি চলছে আদালতে। আদালতই একমাত্র এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।”
তিনি এদিন আরও বলেন, “গোটা দেশের অপরাধের তীব্রতা আমরা জানি না। জানা সম্ভবও নয়। এই মামলাগুলির ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদের মতো গুরুতর অভিযোগ থাকতে পারে। আমার মতে, এই আইনকে স্থগিত না রেখে, এই মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জামিনের আদেশের সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়ার নির্দেশ জারি করা যেতে পারে। এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা এর আগেও বিচার করা হয়েছিল।”
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান বিচারপতি এর আগে সওয়াল করেছিলেন, আমাদের দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উদযাপন করছে তখন ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১২৪ ধারাটির আর কি প্রয়োজন আছে? এই আইন ব্রিটিশরা চালু করেছিল ভারতীয়দের ওপর দমন পীড়নের জন্য৷ এখন আমাদের স্বাধীন দেশে এর কি আর প্রয়োজন আছে? বর্তমানে এই আইনের আর কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না।