প্রাথমিক ভাবে স্যুইগির মূল কাজ ছিল বাড়ি বাড়ি খাবার ডেলিভারি দেওয়া। তবে, পরে ধীরে ধীরে এই সংস্থার আরও ব্যাপ্তি ঘটে। বিশেষত, করোনা মহামারির সময় যখন চারদিকে বাজার হাট সমস্ত বন্ধ ছিল, তখন স্যুইগি, জোম্যাটোর মত ফুড ডেলিভারি সংস্থাগুলো রমরমিয়ে ব্যবসা করেছে। সেসময়, শুধু খাবারই নয়, বাড়িতে বাড়িতে বিভিন্ন দ্রব্যও পৌঁছে দিয়েছিল স্যুইগি সংস্থা। উল্লেখ্য, এই অ্যাপ দ্বারা দেশের বহু শহরেই মুদিখানার জিনিস থেকে শুরু করে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।
কিন্তু, এখন কথা হচ্ছে যে, স্যুইগি সমস্ত ক্ষেত্রে তেমন লাভ করতে পারছে না। ফলে, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের ৫ টি শহরে ‘সুপার ডেইলি‘ পরিষেবা বন্ধ করে দেবে তারা। স্বাভাবিক ভাবেই, এমন সিদ্ধান্তে হতাশ স্যুইগির বহু কর্মীরা, এর বড়সড় প্রভাব পড়তে চলেছে তাদের ওপর। জানা গিয়েছে, শুধু সুপার ডেইলি পরিষেবাই নয়, ‘স্যুইগি জিনি‘ নামক আরেকটি পরিষেবাও দেশের বিভিন্ন শহরে আপাতত বন্ধ রেখেছে এই সংস্থা।
উল্লেখ্য, স্যুইগি জিনি মূলত জিনিসপত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে। যদিও, এই পরিষেবা একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি স্যুইগি সংস্থা। সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দিন দিন অন্যান্য ক্ষেত্রে চাহিদা বেড়েই চলেছে। এই পরিমাণ চাহিদা বৃদ্ধির ফলে তাদের ডেলিভারি পার্টনারের সংখ্যা কম পড়ে যাচ্ছে। তাই জিনি পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখার কথা ভাবা হচ্ছে৷
তবে, অন্যদিকে সুপার ডেইলির বিষয়টা আলাদা। দেশের পাঁচটি বড় শহর দিল্লি, মুম্বাই, হায়দ্রাবাদ, পুনে এবং চেন্নাইতে বন্ধ রাখা হয়েছে এই পরিষেবা। এই সুপার ডেইলি পরিষেবার মাধ্যমে বাড়িতে বাড়িতে দুধ, বিস্কুট, পাঁউরুটির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীগুলি পৌঁছে দেওয়া হত। উল্লেখ্য, মুম্বাই আইআইটির দুই প্রাক্তন ছাত্র শ্রেয়াস নাগড়াওয়ানে এবং পুনীত কুমার ২০১৫ সালে নিজেদের উদ্যোগে এই সুপার ডেইলি পরিষেবা চালু করে। পরে, তারা ওই ব্যবসা স্যুইগিকে হস্তান্তর করে। এরপর অবশ্য এই পরিষেবার দায়িত্ব গ্রহণ করেন সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ফানি কিষাণ।
২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে এই পরিষেবা চালু করে স্যুইগি। সেই সময় মুম্বাই শহরে প্রতিদিন প্রায় ৬০০০ মতো অর্ডার পেত এই সুপার ডেইলি। এরপর উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায় ব্যবসা। গত চার বছর ধরে দিনে ২ লক্ষ অর্ডার পেয়ে আসছে এই পরিষেবা। কিন্তু, এতকিছুর পরেও তেমন লাভের মুখ দেখতে পারছে না স্যুইগি সংস্থা।
স্যুইগির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ফানি কিষাণ এ বিষয়ে জানিয়েছেন, “আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ খরচ করছি ব্যবসার ক্ষেত্রে, কিন্তু আশানুরূপ ফল পাচ্ছি না তবুও। স্বাভাবিক ভাবেই, এর প্রভাব পড়বে আমাদের কর্মীদের ওপর। তবে, আমরা চেষ্টা করছি যাতে আমাদের কর্মীরা অন্যান্য পরিষেবার কাজে যুক্ত হতে পারেন খুব দ্রুত। তাহলে, একটু হলেও তাদের চাপটা কমবে।”