নিরিহ গ্রামবাসিদের উপর পুলিশের লাঠি চার্জ এবং কাঁদানো গ্যাস ছোড়ার তীব্র নিন্দা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল এবং কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়। তাদের দাবি পুলিশকে আরো বেশী সংযত আচরন করে মৃতদেহ ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শাসক দলের নেতারা। পুলিশ যাদের আটক বা গ্রেফতার করেছে তাদের মুক্তি নিয়েও পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি। এদিকে বিজেপির তিন বিধায়ক কালিয়াগঞ্জে যেতে চাইলেও পুলিশী বাধায় তারা যেতে পারেন নি। শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়কদের এক প্রতিনিধি দল মৃত কিশোরীর পরিবারকে সমোবেদনা জানাতে বাড়িতে যাবেন বলে জানিয়েছেন গঙ্গারামপুরের বিজেপি বিধায়ক সত্যেন রায়।
কালিয়াগঞ্জ ব্লকে মালগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতে গাংগুয়া গ্রামে রাজবংশী কিশোরীকে ধর্ষন করে খুনের ঘটনায় ওই এলাকায় ধুন্দুমার কান্ড ঘটে। গ্রামবাসি এবং মৃত কিশোরীর পরিবার মৃতদেহ আটক রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ বেশ কিছুক্ষন পর লাঠি চার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাঁটিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ গভ: মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যায়। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২ জনকে আটক করেছে। বিজেপির তিন বিধায়ক গাজোলের মৃন্ময় দেব বর্মন, গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন রায় এবং তপনের বিধায়ক – বুধরায় টুডু ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে রায়গঞ্জ পুলিশ জেলা এবং কুশমুন্ডি থানার পুলিশ বিধায়কদের আটকে দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে এই খবর পৌছতেই তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল এবং কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়কে ঘটনাস্থলে পৌছে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেবার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে জেলা সভাপতি এবং বিধায়ক কালিয়াগঞ্জের মৃত কিশোরীর বাড়িতে পৌছান। জেলা সভাপতি মৃত কিশোরীর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির জন্য জেলা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে পুলিশ যে কায়দায় মৃতদেহ উদ্ধার করেছে তারও তীব্র নিন্দা করেন জেলা সভাপতি এবং বিধায়ক। জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের অভিযোগ, এই ঘটনায় পুলিশকে আরও বেশী সংযত হওয়া উচিত ছিল। বাসিন্দাদের বুঝিয়েই মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। তারজন্য মৃতদেহ আরও দুঘন্টা রাস্তায় থাকত। যে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বাসিন্দাদের ক্ষোভ হবেই। তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে লাঠিচার্জ এবং টিয়ার গ্যাস ফাটিয়ে পুলিশ ঠিক কাজ করে নি। পুলিশ যাদেরকে আটক করেছে তাদের মুক্তির জন্য পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন।এদিকে তিন বিধায়ক কালিয়াগঞ্জে যেতে না পারলেও শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা মৃত কিশোরীর বাড়িতে যাবেন বলে জানিয়েছেন গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন রায়। তিনি জানান, কালিয়াগঞ্জে যে মর্মান্তিক হত্যা হয়েছে তার কোন ভাষা নেই। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থেকে উত্তম পালের রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।