Kolkata: ভোট ঘোষণার আগেই লোকসভা ভোটে সতর্ক নির্বাচন

আরও পড়ুন

সন্দেশখালি ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সিইও অফিস নয়, নিজেদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই যোগাড় করে ফেলেছিল নির্বাচন কমিশন সন্দেশখালীর পুঙ্খানুপুঙ্খ সব তথ্য ভিডিওগ্রাফি সমেত। আর এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে এই প্রথমবার নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশিকা জারি করল, তাতে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা কোন পর্যায়ে গিয়েছে, তার পরিষ্কার একটা ছবি ধরা পড়ছে। কারন, নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে এই প্রথমবার নির্বাচনী নির্ঘন্ট প্রকাশ হওয়ার এত আগে থেকে মিডিয়া মনিটরিং শুরু করে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বৈদ্যুতিন মাধ্যম, খবরের কাগজ এবং ডিজিট্যাল মিডিয়ায় রাজ্যে প্রতিদিন কি খবর হচ্ছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার সবিস্তারের রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কলকাতা উত্তর এবং কলকাতা দক্ষিণ-সহ রাজ্যের মোট ২৩টি জেলার রিপোর্ট পাঠানো শুরু হল বুধবার থেকেই। কেবল তাই নয়, রীতিমতো জাতীয় নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট করে দিয়েছে মোট সাতটি পয়েন্ট। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি,ফেক নিউজ-সহ অন্যান্য সবকিছুই। পাশাপাশি এরই মধ্যে আছে রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ববৃন্দ কখন কোথায় কে কি বলছেন, সেটাও বিস্তারিতভাবে পাঠাতে হবে নির্বাচন কমিশনে। নির্বাচন কমিশনের কাছে এর আগে এতদিন এইসব রিপোর্ট পাঠাতে হ’ত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর থেকে। কিন্তু এই প্রথমবার নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে এত আগে থেকেই এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এবং সম্পূর্ণ রিপোর্ট হাতে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। নির্বাচনের সময় নির্বাচনী বিধির লাগু হওয়ার পর এতদিন ধরে বা এত বছর ধরে যে রিপোর্ট পাঠাতো রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এর দপ্তর বুধবার থেকে সেই রিপোর্ট এবার পাঠাতে হবে প্রতিদিন। এই রিপোর্ট পাঠানোর ক্ষেত্রে থাকছে না কোনও ছুটি। এমনকি জাতীয় ছুটির দিনেও এই রিপোর্ট পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ ইতিমধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশে রয়েছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব মঙ্গলবার দিনই দিল্লি গিয়েছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করতে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর- চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ অথবা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্যে আসতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। যদিও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে ইতিমধ্যেই সব জেলা থেকে রিপোর্ট নেওয়া শুরু করেছে প্রতি সপ্তাহেই। কোন কোন এলাকায় উত্তেজনাপ্রবণ বুধ রয়েছে পাশাপাশি তার জন্য এখন থেকেই জেলা নির্বাচনে আধিকারিকরা সেক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সেই সব কিছুই। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে এবার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে জামিন অযোগ্য ধারায় যারা এখনো পর্যন্ত এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদেরকে নিজেদের আওতার মধ্যে রাখতে। নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর আর কোনভাবেই যেনও তারা বাইরে থাকতে না পারে সে বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকসহ প্রত্যেক জেলার জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যে এখনও পর্যন্ত আশি হাজারের বেশি বুথ রয়েছে যার মধ্যে ৪৭ শতাংশ বুথই শ্যাডোজোনের মধ্যে রয়েছে। যেখানে এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর- যে কোনও মূল্যে ১০০ শতাংশ বুথেই এবার ব্রেক কাস্টিং করা হতে পারে। সম্প্রতি রাজ্যে ঘটে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে তারপর জাতীয় নির্বাচন কমিশন আর কোনোভাবেই একখামতি রাখতে চাইছে না তাঁদের কোন কাজে। ফলে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এইসব পদক্ষেপ গুলি এখন থেকেই বুঝিয়ে দিচ্ছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন এই রাজ্যে এবার কোন রূপ নিতে চলেছে। আর সেই জায়গা থেকেই এখন দেখার জাতীয় নির্বাচন কমিশন কি? তাদের নিজেদের যে ভূমিকা সেটা পালন করতে সক্ষম হবে নাকি নির্বাচনে রাজ্যে সেই হিংসার ছবি ধরা পড়বে প্রতিবারের মতোই সেটাই এখন দেখার।

কলকাতা থেকে নিজস্ব প্রতিনিধির রিপোর্ট টাইমস ফোর্টিন বাংলা

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close