শিবকে কেন্দ্র করে মালদায় অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতি উৎসব গম্ভীরা। আর এই গম্ভীরা উৎসব চলে বাংলা বৈশাখ মাসে একমাস ধরে। এক মাস ধরে চলে মুখা নাচ।এরপর বৈশাখ মাসের শেষদিন অনুষ্ঠিত হয় গম্ভীরা।
এই গম্ভীরা বড়,মেজো,ছোট তামাসা নামে পরিচিত। শেষের তিন দিন বড় তামাসা ছোট তামাসা ও মেজো তামাসার মুখা নাচ অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমান প্রজন্মের কাছে মালদার ঐতিহ্য গম্ভীরা প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই গম্ভীরা শিল্পীদের দাবি এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে পর্যটনে রূপান্তিরত করা হোক।
প্রসঙ্গত , এই জেলার প্রধান লোক সংস্কৃতি হচ্ছে গম্ভীরা। অতি প্রাচীনকাল থেকে পুরাতন মালদায় গম্ভীরা উৎসব হয়ে আসছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার আঙ্গিক বদলেছে। প্রতি বছর ২৮ শে বৈশাখ বিভিন্ন মন্দিরে ঘট ভরা দিয়ে উৎসবের শুরু। পরেরদিন হয় কাঁটানৃত্য। বৈশাখের ভোরে শুরু হয় মা চামুণ্ডার মুখানৃত্য। সেই নাচ শেষ হওয়ার পর প্রতিটি মুখা তার নিজস্ব মন্দিরে চলে যায়। সেখানে শুরু হয় আহারাপুজো। আদপে যা কালীপুজো নাম পরিচিত। এলাকার মহিলারা সেই পুজো করে সংযম পালন করেন। সেদিন রাতেও বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হয়। ৩১ শে বৈশাখ বিকেলে হয় ছদ্মবেশ ধারণ। বর্তমানে পুরাতন মালদা পুরসভার ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এই আসর বসে। বৈশাখ মাসের শেষ দিন রাতে হয় গম্ভীরা গান ও নাচ।
বড় তামাশার মাধ্যমে শেষ হল পুরাতন মালদার গম্ভীরা উৎসব। বিকেলে সং সাজের প্রতিযোগিতা আর রাতে গম্ভীরা গান উৎসবকে প্রাণবন্ত করে তোলে। প্রতিবারের মতো এবারও পুরাতন মালদা পুরসভার তরফে ছদ্মবেশ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন পুরাতন মালদার পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষ, পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক শুভ্র দাস সহ অন্যান্য কাউন্সিলর ও প্রবীণ গম্ভীরা শিল্পীরা।
চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ বলেন, গম্ভীরার অর্থই হল মহাকাল বা শিবের আরাধনা। পৌরাণিক কাল থেকেই এই সংস্কৃতি মালদা জেলায় চলে আসছে। পরম্পরাগতভাবে সেই সংস্কৃতি এখনও বিদ্যমান। গম্ভীরা গানের মাধ্যমে আমরা নানা অর্থাৎ শিবের কাছে গোটা পৃথিবীর মঙ্গল কামনা করি। তাঁর কাছে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে সমাধানের পথ খুঁজি।
ফোর্টিন টাইমলাইন , মালদা।