বিশ্বের উচ্চতম আবহাওয়া দফতর স্থাপন করল চিন

আরও পড়ুন

চিনের নয়া চমক! মাউন্ট এভারেস্টে বিশ্বের উচ্চতম আবহাওয়া দফতর খুলতে সফল হল চিন। চিনের সেই আবহাওয়া দফতরটি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮,৮৩০ মিটার উঁচুতে তৈরি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, চিনের একাধিক বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে সেখানকার একটি অভিযানকারী দল একত্রিত হয়ে বিরাট প্রচেষ্টা করে এই আবহাওয়া দফতরটি স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। অভিযানকারীর দলটি স্বয়ংক্রিয় ওই স্টেশনটির পরীক্ষা করেছে এবং তার সিস্টেম এভারেস্টের ওই হিমশীতল ঠাণ্ডায় লাজ করছে কিনা, তা দেখার জন্য একটি ট্রান্সমিশনও পরিচালনা করছে। 

এভারেস্টের চূড়ায় নয়া আবহাওয়া দফতর

জানা গিয়েছে, এই আবহাওয়া দফতরটি সৌর প্যানেল দ্বারা চালিত। এভারেস্টের ওই প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে গত দু বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই আবহাওয়া দফতরটির ডিজাইন করা হয়েছে। বিশ্বের উচ্চতম এই আবহাওয়া দফতরটিতে ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সিস্টেমেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই রেডিও স্টেশনটি এমনভাবে কোড করা হয়েছে, যাতে প্রতি ১২ মিনিট অন্তর ট্রান্সমিট করতে পারা যাবে। এই উচ্চতম আবহাওয়া দফতর তৈরি করে চিন ব্রিটিশ এবং মার্কিন বিজ্ঞানীদের তৈরি আগের রেকর্ডকে রীতিমতো ভেঙে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে মাউন্ট এভারেস্টের দক্ষিণ প্রান্তে ৮,৪৩০ মিটার উঁচুতে আরেকটি আবহাওয়া দফতর স্থাপন করেছিল ব্রিটিশ এবং মার্কিন বিজ্ঞানীরা মিলে। এবার চিনা বিজ্ঞানীরা সেই রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছেন। মাউন্ট এভারেস্টের বিভিন্ন প্রান্তে চিনের আরও ৩ টি মেটেরোলজিক্যাল স্টেশন অবস্থিত। তার মধ্যে সেগুলি যথাক্রমে ৭,০২৮ মিটার, ৭,৭৯০ মিটার এবং ৮,৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থান করছে। 

তাছাড়া, বেজিংয়ের কাছে মোট এমন ৭ টি স্টেশন রয়েছে। ওই স্টেশনগুলি থেকে ৫,২০০ মিটার এবং ৮,৩০০ মিটারের মধ্যে অপারেট করা যায়। সূত্রের খবর, এই উচ্চতম স্টেশনটি স্থাপন করতে যেসব প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলি দরকার ছিল, সেগুলির ওজন প্রায় ৫০ কেজির মতো। সেগুলো এভারেস্টের ওই শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার আগে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এই আবহাওয়া দফতরটি তার আশেপাশের এলাকা থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবে এবং বিশ্বের তৃতীয় মেরুর আবহাওয়ার রেকর্ডও তারা ধরে রাখতে চেষ্টা করবে। জানা গিয়েছে, চিনের এই বড় অভিযানটি পরিচালিত হয়েছিল ‘আর্থ সামিট মিশন ২০২২‘-এর দ্বারা। 

উল্লেখ্য, বিজ্ঞানীদের দলটি মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছানোর পরে পর্যবেক্ষণ এবং একটি নমুনা মিশন পরিচালনা করে বলে জানা গিয়েছে। অভিযানে সামিল বিজ্ঞানীরা এভারেস্টের বরফ এবং পাথর কতটা পুরু তা শনাক্ত করার জন্য একটি গবেষণাও করেছে ইতিমধ্যে। এত উঁচুতে এই আবহাওয়া দফতর খোলার পেছনে মূল লক্ষ্য হল, সেখানকার জলবায়ু পরিবর্তনের ধরন কেমন তা খুঁজে বের করা এবং মাউন্ট এভারেস্টের ওই শীর্ষে গ্রীন হাউস গ্যাসের ঘনত্বের বৈচিত্র্য কেমন তা পর্যবেক্ষণ করা। 

চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সের অধীনে থাকা ইনস্টিটিউট অফ তিব্বত প্লেটু রিসার্চের প্রধান গবেষক উ জিয়াংগুয়াং এই অভিযানের ব্যাপারে জানিয়েছেন যে, “এই অভিযানের মাধ্যমে আমরা জানতে চাই যে, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচুতে যে বরফ রয়েছে তার ভেতরে কি থাকে।” উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল ২৭০ জনেরও বেশি সদস্য নিয়ে মোট ১৬ টি দল তৈরি করে এই বিরাট অভিযানের সূচনা করা হয়েছিল। তবে, তার মধ্যে কেবলমাত্র ১৩ জন পর্বতারোহীই এই চূড়ান্ত অভিযানে অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলেন। 

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close