ভারত এবং বাংলাদেশের শিশু দিবস পালনের কাহিনী
শিশু দিবস (Children’s Day) শিশুদের নিয়ে উদযাপিত একটি দিবস। এটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় পালিত হয়ে থাকে। শিশু দিবসটি প্রথমবার ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিল তুরস্কে পালিত হয়েছিল। বিশ্ব শিশু দিবস ২০ নভেম্বর-এ উদ্যাপন করা হয়, এবং আন্তর্জাতিক শিশু দিবস জুন ১ তারিখে উদ্যাপন করা হয়। তবে বিভিন্ন দেশে নিজস্ব নির্দিষ্ট দিন আছে শিশু দিবসটিকে উদ্যাপন করার।
প্রসঙ্গত, স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু(Jawaharlal Neheru)। তিনি শিশুদের কাছে “চাচা নেহেরু” হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অন্যদিকে জওহরলাল নেহরুও ছোটদের সঙ্গে সময় কাটাতে খুব ভালোবাসতেন। জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসংঘ ১৯৫৪ সালের ২০ নভেম্বর দিনটিকে শিশু দিবস হিসাবে পালনের জন্যে ঘোষণা করেছিল। সেই ঘোষণা অনুযায়ী ভারতেও ২০ নভেম্বর শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হত। তবে ১৯৬৪ সালের ২৭ মে, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর প্রয়াণের পর শিশুদের প্রতি তার চরিত্রের এই বিশেষ দিকটিকে স্মরণে রেখে সর্বসম্মতভাবে তার জন্মদিনটি ভারতে শিশু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপর থেকেই প্রতিবছর ১৪ নভেম্বর দিনটি ‘শিশু দিবস’ হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে শিশুদের গুরুত্বকে মনে করেই এই দিনটি পালিত হয়। এছাড়াও, এই দিনে শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সব মানুষকে আরও সচেতন করার চেষ্টা করা হয়। শিশুরা যাতে সঠিক শিক্ষা পায়, দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে শিক্ষা পায় সে ব্যাপারেও প্রচার করা হয় এই দিনটিকে উপলক্ষ করে। পাশাপাশি শিশুদের সঠিক পুষ্টির প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরা হয়। দেশের স্কুলগুলিতে এই দিনটিতে পড়াশোনার পরিবর্তে নানারকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কোথাও আবার শিশুদের পিকনিকেও নিয়ে যাওয়া হয়। কচি-কাঁচাদের হাতে এই দিনটিতে তুলে দেওয়া হয় নানা উপহারও। সব মিলিয়ে ভারতে ১৪ নভেম্বর পুরোপুরিই শিশুদের দিন। তবে সব দেশেই শিশু দিবস পালনের উদ্দেশ্য একটাই, দেশের শিশুদের অধিকার ও তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতনতার বার্তা দেওয়া।
বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দিনে এই ‘শিশু দিবস’টি পালন করা হয়। ভারতে যেমন ১৪ নভেম্বর পালন করা হয়, ঠিক তেমনই বাংলাদেশেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ প্রথম জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয় ১৯৯৪ সালে।
জাতীয় শিশু সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা’ প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন `জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। শিক্ষাবিদ ড. নীলিমা ইব্রাহিম দিবসটিকে `জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন ১৯৯৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর শিশু সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার জাতীয় সম্মেলনে। সেই সম্মেলনে প্র্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস পালনের ড. নীলিমা ইব্রাহিমের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানান। এরপর ১৯৯৪ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা প্রথমবারের মত বেসরকারিভাবে ১৭ মার্চ `জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করে। প্রথম জাতীয় শিশু দিবস উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনটিকে সরকারিভাবে `জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে সরকারীভাবে দিবসটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয় বাংলাদেশে।
আপনিও হয়ে উঠতে পারেন নামী লেখক। ছোট গল্প, কবিতা, শিক্ষামূলক লেখা পাঠান আমাদের ই-পোর্টালের মেইল আইডিতে। বিভাগীয় সম্পাদক , ’শনিবারের বিকেল’times.14.2020@gmail.com