জানুন জামাই ষষ্ঠী ব্রতের মাহাত্য
আর মাত্র ৫ দিন পরই জামাই ষষ্ঠী। জামাই ষষ্ঠীমানেই শাশুড়ি মায়ের তার জামাইয়ের জন্য বিভিন্ন রকমের পঞ্চব্যঞ্জন রান্না করা। সেই পঞ্চব্যঞ্জনে কি থাকে না। বিভিন্নরকম ফল থেকে শুরু করে খাসির মাংস, ইলিশ, চিংড়ি তো একেবারে কমোন। আরও জাঁকজমক আয়োজনের জন্য প্রায় সব ধরণেরই মাছ রান্না করে সামনে থাকে জামাইয়ের। তাছাড়া তার সঙ্গে মিষ্টি, দই আরও কত কি !
জামাই ষষ্ঠী খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর আনন্দের একটি উৎসব। বিভিন্ন উৎসবের বিভিন্ন রকমের গুরুত্ব রয়েছে। তাছাড়া প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাই ষষ্ঠী পালন করা হয়। সে নতুন জামাই হোক অথবা বুড়ো জামাই, জামাইষষ্ঠীর প্রথা অনেক দিন আগে থেকে চলে আসছে। বছরের আর কোনও দিন হোক না হোক এদিন জামাইকে তৃপ্তি করে খাওয়ান তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।
বিভিন্ন রকম কারণ হতে পারে, তবে তাৎপর্য নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। জামাই ষষ্ঠীর খাবার ষষ্ঠী পালন সাধারণত করে থাকেন মেয়েরা। তাদের কাছে তাৎপর্য একেবারে অন্যরকম। কাহিনী অনুসারে জানা যায় যে, একটি পরিবারে দুটি বউ ছিল। ছোট বউ ছিল খুবই লোভী, বাড়ির মাছ, মাংস এবং অন্যান্য ভালো খাবার রান্না হলেই সে লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নিতো আর শাশুড়ির কাছে অভিযোগ করতো, সব কালো বেড়ালে খেয়ে নিয়েছে।
তাছাড়া, আমরা সকলেই জানি যে বিড়াল হল মা ষষ্ঠীর বাহন। তাই বেড়াল মা ষষ্ঠীর কাছে অভিযোগ জানালো যে, সে চুরি না করেও চুরির দায় কেন নেবে। এর ফলে মা ষষ্ঠী খুবই রেগে গেলেন, যার ফলে ছোট বইয়ের একটি করে সন্তান হয় আর মা ষষ্ঠী তার প্রাণ হরণ করেন অর্থাৎ সেই সন্তান মৃত জন্মায় অথবা জন্ম নেওয়ার পরে মারা যায়।
এইভাবে চলতে চলতে ছোট বউয়ের সাতটি পুত্র সন্তান এবং একটি কন্যা সন্তানকে মা ষষ্ঠীর ফিরিয়ে নেন। ফলে স্বামী, শাশুড়ি এবং আরও অন্যান্যরা মিলে তাকে অলক্ষণা বলে গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে একেবারে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেন। অথচ বড় বউ পুত্র-কন্যা নিয়ে সুখে ঘর সংসার করতে থাকে। ছোট বউ মনের দুঃখে বনে চলে গেলে সেখানে একা বসে কাঁদতে থাকে। অবশেষে মা ষষ্ঠী একজন বৃদ্ধার ছদ্মবেশে তার কাছে এসে ছোট বইয়ের কান্নার কারন জানতে চাইলেন। সে তার দুঃখের কথা সবিস্তারে মা ষষ্ঠীকে জানাল।
আগের সমস্ত অন্যায় আচরণের কথা বলার পর ছোট বউ মা ষষ্ঠীর কাছে ক্ষমা চায় আর মা ষষ্ঠী ও তাকে ক্ষমা করে দেন। এর পরে বলেন ভক্তি ভরে ষষ্ঠীর পুজো করলে সাতটি পুত্র এবং একটি কন্যার জীবন ফিরে পাবে। তখন ছোট বউ সংসারে ফিরে এসে ঘটা করে মা ষষ্ঠীর পুজো করে। তারপর মা ষষ্ঠীর কথা মতো তার সন্তানদের ফায়ার পায়।
এর ফলে চারিদিকে ষষ্ঠী পুজোর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে, আর এটাই ছিল জামাইষষ্ঠী অথবা অরণ্য ষষ্ঠী যাই বলুন না কেন, এর ব্রত কথার মূল গল্প। আবার অন্যদিকে যে সময় জামাইষষ্ঠী পালন করা হয় জৈষ্ঠ মাসে, সেই সময় প্রকৃতিতে আম, জাম, কাঁঠাল, বিভিন্ন রকমের ফলের সমারোহ দেখা যায়।
আপনিও হয়ে উঠতে পারেন নামী লেখক। ছোট গল্প, কবিতা, শিক্ষামূলক লেখা পাঠান আমাদের ই-পোর্টালের মেইল আইডিতে। বিভাগীয় সম্পাদক, ’শনিবারের বিকেল’times.14.2020@gmail.com