শনিবারের বিকেল : 9 July, 2022

আরও পড়ুন

আসুন জেনে নেওয়া যাক অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী

অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৬ নভেম্বর (২২ কার্তিক ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ) ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের ঢাকা জেলার আড়াই হাজার থানার রাইনাদি গ্রামে। এটি সঠিক ছিল না। তার সাক্ষাৎকার দ্রষ্টব্য তার পিতা অভিমন্যু বন্দ্যোপাধ্যায় মুড়াগাছা জমিদারের অধীনে কাজ করতেন। মাতার নাম লাবণ্যপ্রভা দেবী। তাঁর কৈশোর কেটেছে গ্রামের বাড়িতে যৌথ পরিবারে। বিদ্যালয়ের পড়াশোনা সোনারগাঁও এর পানাম স্কুলে। কিন্তু দেশভাগের পর ছিন্নমূল হয়ে তারা চলে আসেন ভারতে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের বানজেটিয়া গ্রামে গড়ে ওঠা মণীন্দ্র কলোনিতে পিতার বাড়িতে কিছুকাল থিতু হয়ে থাকেন। এখান থেকেই প্রবেশিকা পরীক্ষা দেন। তারপর যাযাবরের ন্যায় কেটেছে তার যৌবন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বি.কম.পাশ করেন ও পরে বি.টি. পাশ করেন। বি.টি.পড়ার সময়ই আলাপ হয় সহপাঠী ‘মমতা’র সঙ্গে। পরে তাকে বিবাহ করেন।

এরপর কাজের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়েন। কখনো নাবিকরূপে সারা পৃথিবী পর্যটন, আবার কখনো বা ট্রাক-ক্লিনারের কাজ লেগে পড়া। পরে এক প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। অল্প কিছু দিন মুর্শিদাবাদ জেলার চৌরীগাছা স্টেশন নিকটস্থ সাটুই সিনিয়ার বেসিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি। তিন-চার বৎসর সাটুইয়ে থাকার পর ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি পাকাপাকি ভাবে চলে আসেন কলকাতায়। কখনো হলেন কারখানার ম্যানেজার, কখনো বা প্রকাশনা সংস্থার উপদেষ্টা। পরে অমিতাভ চৌধুরীর আহ্বানে যোগ দেন কলকাতার ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় সাংবাদিকতার কাজে এবং সেখান থেকেই কর্মে অবসর নেন।

বিভিন্ন পেশার মধ্যে থেকেও লেখালেখি করে গেছেন তিনি। তবে কলেজে পড়ার সময় থেকেই তার সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ জন্মে যায়। আর পেশার তাগিদে ঘুরে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন তাই স্থান পেয়েছে তার সাহিত্যকর্মে। তার প্রথম গল্প ওয়েলসের বন্দর শহর নিয়ে লেখা ‘কার্ডিফের রাজপথ’ প্রকাশিত হয় বহরমপুরের “অবসর” পত্রিকায়। তার এর পরের গল্প ছিল ‘বাদশা মিঞা’। বহরমপুরের কলেজের বন্ধুদের আগ্রহে’উল্টোরথ’পত্রিকায় উপন্যাস প্রতিযোগিতায় জাহাজের জীবন নিয়ে প্রথম উপন্যাস “সমুদ্র মানুষ” লিখেই ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে ‘মানিক-স্মৃতি পুরস্কার’ লাভ করেন তিনি। এরপর তিনি তার অর্থসঙ্কট মেটাতে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে লিখে গেছেন বহু উপন্যাস। ছোট-কিশোর ও বড়দের সবার জন্যই তিনি লিখেছেন। তবে তার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাসটি হল ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’। এটি মূলত চারটি সিরিজে বিন্যস্ত। প্রথম পর্ব ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’,দ্বিতীয় পর্ব ‘মানুষের ঘরবাড়ি’,তৃতীয় পর্ব ‘অলৌকিক জলযান’ এবং চতুর্থ পর্ব হল ‘ঈশ্বরের বাগান’। দেশভাগের যন্ত্রণা নিয়ে লেখা এই উপন্যাসে ছিন্নমূল মানুষের জীবন,তাদের সংগ্রামী বিষয় এবং পটভূমিসহ জীবনের রোমাঞ্চকর অভিযানের লৌকিক অলৌকিক উপলব্ধি সুন্দরভাবে পরিস্ফুটিত হয়েছে। তার এই রচনা কেবল বাংলা সাহিত্যকে নয়,ভারতীয় সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। ভারতের ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট-এর উদ্যোগে ক্লাসিক পর্যায়ে বারোটি মূল ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলমে গ্রাম বাংলার জীবনও অনেক বেশি করে ধরা দিয়েছে। তাই তার মধ্যে অনেকে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরাধিকার খুঁজে পান।

গল্প

 

প্রেসিডেন্ট কেনেডির থেকে ৩০০ কোটি টাকা ‘ফিজ’ নেন ডঃ বিধানচন্দ্র রায়, কেন জানেন?

হঠাৎই ডঃ রায় প্রশ্ন করলেন, ‘আচ্ছা, আপনার কি বেশ কিছুদিন ধরে পিঠটা খুব ব্যথা করছে?’ প্রশ্ন শুনেই চমকে উঠলেন প্রেসিডেন্ট কেনেডি। বিস্ময়ের সুরে বললেন, ‘ঠিক বলেছেন তো! বেশ যন্ত্রণা পিঠে। কিন্তু আপনি কীভাবে জানলেন?’

আজ থেকে প্রায় ৬১ বছর আগেকার কথা। ১৯৬১ সালের ৬ অগস্ট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জে এফ কেনেডির সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাত্কারে বসেছেন পশ্চিমবঙ্গের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধানচন্দ্র রায়। সম্পূর্ণ ঘটনা বিস্তারিত ভাবে বর্ণিত আছে নিউ ইয়র্ক টাইমসে।

টুকটাক কথাবার্তা হচ্ছে। হঠাৎই ডঃ রায় প্রশ্ন করলেন, ‘আচ্ছা, আপনার কি বেশ কিছুদিন ধরে পিঠটা খুব ব্যথা করছে?’ প্রশ্ন শুনেই চমকে উঠলেন প্রেসিডেন্ট কেনেডি। বিস্ময়ের সুরে বললেন, ‘ঠিক বলেছেন তো! বেশ যন্ত্রণা পিঠে। কিন্তু আপনি কীভাবে জানলেন?’

উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী হালকা হেসে জানালেন, ‘পেশায় আমি একজন চিকিত্সক। তবে নেশায় আমি রাজনীতিবিদ।’

তাঁর উত্তর শুনে তখন আরও অবাক কেনেডি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কিন্তু আপনি তো আমার রোগ পরীক্ষাও করেননি। এভাবে দেখে কী করে বলে দিলেন?’ উত্তরে স্রেফ হাসতে থাকেন বিধানচন্দ্র রায়।

তাঁর প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে নিজের সমস্ত প্রেসক্রিপশন, মেডিকেল হিস্ট্রি, টেস্ট রিপোর্ট এনে দেখান প্রেসিডেন্ট। সেগুলি দেখে ডঃ রায় বেশ অসন্তুষ্ট হন। তারপর তিনি নিজে কিছু ওষুধ লিখে দেন। তারপর বলেন, ‘এই আমি ওষুধ লিখে দিলাম। আগামী এক বছরের মধ্যে যদি ব্যথা না সারে, তাহলে আমি নিজে আবার আসব আপনার কাছে, তাও আবার নিজে খরচ করে।’

জে এফ কেনেডি পুরো ব্যাপারটায় বেশ মজা পেলেন। খুশিও হলেন অনেক। এরপর বেরিয়ে আসছেন বিধানচন্দ্র রায়, এমন সময়ে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লেন। বললেন, ‘আচ্ছা আমার ডাক্তারির পারিশ্রমিক?’

প্রশ্ন শুনে যারপনাই অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সত্যিই তো, চিকিৎসককে তো তাঁর ফিজ দেওয়া উচিত্! একটু অপ্রস্তুত হয়ে বললেন, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, নিশ্চই, আপনার ফি কত টাকা?’

আর তখনই ডঃ বিধানচন্দ্র রায় যেটা করে বসলেন, তা কল্পানতীত। বের করলেন তাঁর কলকাতার উন্নয়নের মাস্টারপ্ল্যান। জানালেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তাঁর রাজ্যের ৩০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রয়োজন।

ভারতের একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রচেষ্টায় অবাক হয়ে গেলেন প্রেসিডেন্ট কেনেডি। সঙ্গে সঙ্গেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সহায়তায় কলকাতার উন্নয়নের পরিকল্পনার সমীক্ষা করা হবে বলে জানালেন।

এরপর বাকিটা সোনালি অক্ষরে লেখা ইতিহাস। গঠিত হল ক্যালকাটা মেট্রোপলিটন প্ল্যানিং অর্গানাইজেশন। এর অধীনে টাউনশিপ, স্কুল, হাসপাতাল, মিউনিসিপ্যাল ম্যানেজমেন্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন- কী না হয়নি!

আপনিও হয়ে উঠতে পারেন নামী লেখক। ছোট গল্প , কবিতা , শিক্ষামূলক লেখা পাঠান আমাদের ই- পোর্টালের মেইল আইডিতে। বিভাগীয় সম্পাদক ,’ শনিবারের বিকেল’ times.14.2020@gmail.com

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close