শনিবারের বিকেল : 23rd April, 2022

আরও পড়ুন

  • চিকিৎসক -সাহিত্যিক নীহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়িও বাংলাদেশে ! চলুন উঁকি দেওয়া যাক পাশের বাড়িতে  

সাহিত্যিক ডাঃ নীহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলাধীন ইতনা ইউনিয়নের ইতনা নামের গ্রামে । লোহাগড়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৫.৫ কি.মি .দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ইতনা গ্রাম। এ গ্রামের ইতনা বাজারের উপর দিয়ে পূর্ব পশ্চিমে চলে গেছে লোহাগড়া ইতনা পাকা সড়ক। ইতনা বাজারের একটু পশ্চিমে এই পাকা সড়ক থেকে দক্ষিণ দিকে ইতনা বালিকা বিদ্যালয়গামী ইটের রাস্তা।ওই রাস্তার আঁকাবাঁকা পথে প্রায় আধা কি .মি .গেলে রাস্তাটি পূর্বদিকে বেঁকে গিয়েছে। এ রাস্তা ধরে আরও ২০০ মিটার এগিয়ে গেলে উত্তরদিক অভিমুখে কাঁচা রাস্তার সামনে এই ঐতিহাসিক বাড়িটির অবস্থান।

ডাঃ নীহার রঞ্জন গুপ্ত ১৯১১ সালের ৬ জুন তৎকালীন যশোরের (বর্তমান নড়াইল জেলা)লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সত্যরঞ্জন গুপ্ত এবং মায়ের নাম লবঙ্গলতা দেবী। তিনি জীবনের দীর্ঘকাল অতিক্রম করেছেন কলকাতায়। তিনি চিকিৎসক পেশার পাশাপাশি সাহিত্যিক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি ১৯৮৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি এপার বাংলার কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। ইতনা গ্রামে অবস্থিত সাহিত্যিক নীহার রঞ্জন গুপ্তের পৈতৃক বাড়িটি আজও তাঁর স্মৃতি বহন করেছে।

Dr. Nihar Ranjan Gupta

নীহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়িটি একটি দোতলা ভবন ও একটি মন্দির রয়েছে। মন্দিরটি দোতলা ভবনের সামনে প্রবেশপথের সামনে বাঁপাশে অবস্থিত। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত দোতলা ভবনটির নির্মাণশৈলী সাধারণমানের। দক্ষিণমুখী এই ভবনটি তৈরিতে ইট ও চুন-সুরকি ব্যবহার করা হয়েছে। ছাদে কাঠের বর্গার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ছাদ বরাবর বহুভাঁজ নকশা বিশিষ্ট কার্নিশ রয়েছে। ভবনটির নিচতলায় ৭ টি কক্ষ ও সামনে সরু বারান্দা রয়েছে। বারান্দা থেকে ভেতর কক্ষে প্রবেশ করার জন্য অনেক একাধিক প্রবেশপথ রয়েছে। বারান্দার সামনের দিকে রয়েছে নকশা করা সেগমেন্টাল খিলানযুক্ত স্তম্ভ।

দোতলায় উঠার একমাত্র সিঁড়িটি এ ভবনের উত্তর -পূর্ব কোণে রয়েছে। ভবনের উত্তরের অংশটি দোতলা এবং দক্ষিণের অংশটি একতলা। উত্তরের দোতলা অংশটিতে পূর্ব-পশ্চিমের লম্বা বারান্দা সহ তিনটি কক্ষ রয়েছে। দোতলার বারান্দার সামনের দিকে রয়েছে সেগমেন্টাল খিলানযুক্ত স্তম্ভ। নিচতলা এবং দোতলার প্রায় প্রতিটি কক্ষে একাধিক কুলঙ্গি ও দেয়াল আলমারী রয়েছে। এ ভবনের দরজা ,জানালা দেয়াল আলমারীতে কাঠের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। দরজা ও জানালার কপাটে ফুল ও লতাপাতার আঁকা ছবি রয়েছে নিচতলার সামনের দিকের বারান্দার
বাংলায় ‘আনন্দ অন্নদা কুটির’ নামটি জ্বল জ্বল করছে।

Dr Nihar Ranjan Gupta House

নীহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়িতে অবস্থিত মন্দিরটি আয়তাকার ভূমি পরিকল্পনায় তৈরি। এ মন্দিরের দৈর্ঘ্য ৮.৩০ মিটার ও প্রস্থ ৭.১৫মিটার। ইট ও চুন -সুরকি দিয়ে তৈরি এই মন্দিরের সামনে একটি বারান্দা ও পিছনে একটি মাত্র কক্ষ রয়েছে। প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার পাদমঞ্চের সামনে নির্মিত এ মন্দিরের সামনে দুই ধাপের সিঁড়ি রয়েছে। সিঁড়ি দিয়ে সামনের বারান্দায় প্রবেশ করা যায়। বারান্দার সামনের দেওয়ালে অর্ধবৃত্তাকার খিলানযুক্ত একটি তোরণ রয়েছে। এই তোরণের তিনটি প্রবেশ পথ রয়েছে। গোলাকার পিলারের উপর দন্ডায়মান প্রবেশপথ গুলোর মধ্যে মাঝের প্রবেশ পথটি আকারে বড়ো। পিলারের উপর ও নিচে বেন্ট নকশা রয়েছে। তবে এ তোরণের খিলানের স্পেনড্রিলে গরুর মাথার প্রতিকৃতি রয়েছে। পশ্চিম দেওয়ালের মাঝামাঝি একটি কুলঙ্গি এবং কুলঙ্গির বাঁদিকে একটি জানালা এবং পাশে প্রবেশ পথ রয়েছে। পূর্ব দেওয়ালের মাঝামাঝি একটি জানালা এবং জানালার বাঁদিকে একটি কুলঙ্গি সেই সঙ্গে পাশে একটি দেওয়াল আলমারী রয়েছে। একতলা বিশিষ্ট এই মন্দিরটি ছাদ তৈরিতে লোহা , কাঠের বর্গা ও টালির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

২০০৩ সালে নীহার রঞ্জন গুপ্তের বাসভবনটি গণ-প্রজাতান্ত্রি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত একটি পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংস্কার – সংরক্ষণ কাজের মাধ্যমে বাড়িটির পূর্বের আদলে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে।

  • কবিতাঃ     

বে-আক্কেলে

Shyama Charan Karmakar

শ‍্যামাচরণ কর্মকার

সেদিন যখন অফিস যাচ্ছি একটা মিনিবাসে
একজন লোক জায়গা পেয়ে বসেন আমার পাশে।
বেশভূষা তাঁর ধোপদুরস্ত নয় তো এলেবেলে
ভদ্দর লোক হলেও দেখি বড্ড বে-আক্কেলে।

দেখেই বলি, মাস্ক পরেননি? মুখটা কেন ফাঁকা?
মুখোশছাড়া চলাফেরা উচিত তো নয় কাকা।
করোনা যে যাচ্ছে বেড়ে মুখেতে মাস্ক পরুন
নইলে মুখে রুমাল বাঁধুন, নইলে দু’হাত সরুন।

ভেবেছিলাম সাদাসিদে কিন্তু দেখি গোঁয়ার
কথা শুনেই গেলেন রেগে, মুখে কথার জোয়ার।
বলেন, দেখুন জ্ঞান দেবেন না কথা কমান মুখে
‘ বডি দেখুন’ এটা দিয়েই করোনা দিই রুখে।

অবাক হয়ে বলি, তা ঠিক আপনি হলেন হাতি
আমি হলাম মশা এবং শরীরখানাও পাতি।
আপনি না হয় দেবেন রুখে মরব আমি রোগে
গা-জোয়ারি করেই কেন ফেলবেন দুর্ভোগে?

রেগেই বলি, কন্ডাক্টর, দেখুন কাণ্ডখানা
মাস্কটা মুখে পরতে হবে এটা কি নেই জানা?
একে ধরে দিন নামিয়ে চুপ যে আছেন দেখি,
কন্ডাক্টর মুখ ঘোরাতেই অবাক হলাম, একী!

আপনারও নেই মুখেতে মাস্ক? ড্রাইভারেরও তাই?
নামতে বলে কাজ নেই আর আমিই নেমে যাই।
বে-আক্কেলে লোকের সংখ‍্যা দিন দিন যায় বেড়ে
সুযোগ পেয়ে করোনা-ও যাচ্ছে না দেশ ছেড়ে!

চৌকাঠের ওপারে

সুনন্দা গোস্বামী

Sunanda Goswami

দরজাটা কবে যেন বন্ধ হয়ে গেছে
এখন ইচ্ছেগুলোর ওপর মরচে ধরা দিন আর রাত
খেলা করে যায়
ঘরের মধ্যে ছড়ানো ছেটানো দুঃখগুলো
বাইরে ফেলে আসা যায় না
ইদানিং চাঁদ হাসা রাতকেও ডাকা হয় না
ঘুমের ঘোরে
দরজাটা কবে যেন বন্ধ হয়ে গেছে
বৃন্তে বৃন্তে সাজানো রয়েছে
আবছা হয়ে থাকা বোবা ভাষা
চৌকাঠের ওপারেই থমকিয়ে থাকে
আশ্বিনের সোনালী সকাল

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close