এবার ডিএ মামলায় বড়সড় ধাক্কা পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দিয়ে ডিএ মামলায় স্যাটের রায়ই বহাল রাখল কলকাতা হাই কোর্ট। তাছাড়াও, ৩ মাসের মধ্যে স্যাট-এর রায় কার্যকর করারও নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। অর্থাৎ ৩ মাসের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারি হারে ডিএ পাবেন রাজ্য সরকারের কর্মীরা।
শুক্রবার হাই কোর্ট জানিয়েছে, “কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দিতে হবে সরকারি কর্মীদের। মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারিদের সাংবিধানিক এবং মৌলিক অধিকার। রাজ্য সরকারের কৌসুলিদের যুক্তি খারিজ করে দিয়ে আদালত জানিয়ে দেয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে মহার্ঘ ভাতা অন্যরকম ছিল। ১৯৪৭ সালে প্রথম বেতন কমিশন গঠন হওয়ার পর থেকেই ডিএ বেতনের অংশ হিসাবে বিবেচিত। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি হলে সরকারকে ডিএ দিতেই হবে।
হাই কোর্টের নির্দেশ, “রাজ্য সরকার অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী ডিএ দিতে বাধ্য। রাজ্য সরকারি কর্মীরা ডিএ পাবেন ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী। ৩ মাসের মধ্যেই রাজ্য সরকারকে কর্মীদের ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে।”
মামলাকারীদের আইনজীবীর দাবি, “এরপর আর কর্মীদের ডিএ দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না রাজ্য সরকারের। কোষাগারে টাকা নেই, বা এই ধরনের কোনও অজুহাত দেওয়া চলবে না।” বস্তুত এই মুহূর্তে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ’র ফারাক প্রায় ৩১ শতাংশ। সেই ফারাক মেটাতে হলে সত্যিই বড় চাপ পড়তে পারে সরকারি কোষাগারে।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে ডিএ-র ফারাক নিয়ে ২০১৬ সালে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় ২০১৮ সালের আগস্টে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ন্যায্য অধিকার। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই রায় মানতে চায়নি। পালটা হাই কোর্টের সেই রায়ের রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয় রাজ্যের তরফে। হাই কোর্ট মামলা ফিরিয়ে দেয় স্যাট-এর হাতে।
স্যাট সেই রিভিউ মামলায় ২০১৯ সালের জুলাই মাসে জানিয়ে দেয়, ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকার। ন্যাশনাল ইনডেক্স অনুযায়ীই ৬ মাসের মধ্যে ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। স্যাট-এর সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আবার হাই কোর্টে রিভিউ পিটিশন দায়ের করে রাজ্য। এখন দেখার রাজ্য সরকার কতদিনে ডিএ মিটিয়ে দেয়।
Fourteen Web Desk, Kolkata