ফ্যাসিস্ট শব্দের নতুন সংজ্ঞা এবার বাংলায়। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্ফোরক হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার রাজ্যসভায় এমনটাই জানালেন তিনি। অমিত শাহ
রাজ্যসভায় জানিয়েছেন, ফ্যাসিস্ট শব্দের নতুন সংজ্ঞা তৈরি হয়েছে পশ্চিমবাংলায়। পশ্চিমবঙ্গে গেলে খুন হয়ে যেতে পারেন। তাই বাংলায় না যাওয়াই ভাল। রাজ্যসভায় তৃণমূলকে এইভাবেই আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজ্যসভায় একটি বিল নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই সময়ে রাজ্যসভার অনেকেই তাঁর কথায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, মুলতুবি প্রস্তাব আনার চেষ্টা হচ্ছিল। তখনই তৃণমূলকে আক্রমণ করে অমিত শাহ এই কথা বলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা সঞ্জয় সিং রাজ্যসভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, তিনি যখন গুজরাতে যাচ্ছেন, তখন তাঁর বা তাঁর দলের বিরুদ্ধে কেনও এফ আই আর করা হচ্ছে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও গুজরাতের মানুষ। সঞ্জয় সিংয়ের সেই প্রশ্নের পাল্টা অমিত শাহ জানান, “আমি এই বিষয়ে জানি না। তবে আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গে যান, তাহলে তো আপনার জীবনই চলে যাবে।”
বিষয়টি নিয়ে বঙ্গ বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, “এর আগে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নিজের সেই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা রয়েছে। শুধু তিনিই নন, তিনি যখন কলকাতায় মিছিল করছিলেন, তখন মিছিলের উপর হামলা হয়। ডায়মন্ড হারবারে জে পি নাড্ডার কনভয়ের উপর হামলা হয়েছিল। রাজ্যে যে ফ্যাসিস্ট সরকার রয়েছে, তার বাস্তবতা তিনি রাজ্যসভায় তুলে ধরেছেন।”
এই বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছেন, “একদম বাজে কথা। অমিত শাহ তো নিজে এত বার বাংলায় এসেছিলেন। তিনি কি খুন হয়েছেন ? জে পি নাড্ডা কি খুন হয়েছেন ? তাঁর সামনের একটি গাড়িতে দুটো ইট পড়েছিল। বিজেপি নেতারা দলে দলে এসেছিলেন ভোটের সময় প্লেনে করে। তাঁরা কি কেউ খুন হয়েছেন ? এগুলি হচ্ছে অসত্য কথাকে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সুযোগকে ব্যবহার করছেন।” সেই সঙ্গে তৃণমূল সাংসদের আরও সংযোজন, “ফ্যাসিস্ট বাংলায় নেই, ফ্যাসিস্ট হচ্ছে বিজেপি। যারা দাঙ্গা করায়। অমিত শাহর নাকের ডগায় দিল্লিতে হিংসা হয়েছে।” এর পাশাপাশি হাথরস কিংবা লখিমপুরের কথাও স্মরণ করান তিনি।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সাম্প্রতিককালে বার বার প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। একের পর এক জনপ্রতিনিধির উপর হামলা এবং খুনের মতো ঘটনা ঘটছে। তাতে পুলিশের যোগ থাকার অভিযোগ উঠছে। বগটুইয়ে একের পর এক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন কড়া বক্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
টাইমস ফোর্টিন ব্যুরো, নয়া দিল্লি।