জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চরখয়রামারী প্রাথমিক বিদ্যালয়এখন গঙ্গায় তলিয়ে যাবার অপেক্ষায়। চিন্তিত ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকেরা। গঙ্গা ভাঙ্গন রুখতে বাঁধ দেওয়া হলেও, ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্কুল। প্রশাসনের বক্তব্য- ভয়ের কিছু নেই।
স্থানীয় সূত্রে খবর, জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চরখয়রামারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দোতলার ঘরে ক্লাস করছে।
চরখয়রামারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দীর্ঘ আড়াই বছরের বেশি সময় হয়ে গেলেও নতুন স্কুল বিল্ডিং তৈরি করার তৎপরতা নেই প্রশাসনের। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই পঞ্চায়েতের দুর্লভপুর, রানীনগর ও গৌরনগর এলাকায় ভাঙ্গন চলছে। তার মধ্যে গৌরনগর মৌজার কোন অস্তিত্বই নেই। দুর্লভপুর ও রানীনগর মৌজার দুই গ্রাম চরখয়রামারী ও খাসেরচর ভাঙ্গনের মুখে। তারমধ্যে এই স্কুলও রয়েছে।
এরই মাঝে ভাঙ্গনের ফলে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। করোনার আর লকডাউনে প্রাইমারি স্কুলের পাশে থাকা অঙ্গনারী সেন্টারও ভাঙ্গনের কবলে। খাসেরচরের ফ্লাড সেন্টার গঙ্গার জলে তলিয়ে গিয়েছে । সরকারিভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বালির বস্তা ও পাইলিং করে স্কুলটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
স্থানীয় মানুষের আশঙ্কা এর আগে বহুবার নদী ভাঙনের রোধ করা চেষ্টা হয়েছিল।১৯৪৯ সালে চরখয়রামারী প্রাথমিক স্কুল তৈরী হওয়ার সময় গঙ্গার দূরত্ব ছিল দুই কিলোমিটার। সেই দূরত্ব এখন দু ফুটেরও কম। এই প্রাথমিক স্কুলে ৬২ জনের বেশি ছাত্র ছাত্রী পড়াশোনা করত। সেই পড়ুয়ার সংখ্যা হয়েছে ৫০জন। অধিকাংশ পড়ুয়ারা স্কুলের কারণে অন্য স্কুলে ভর্তি হচ্ছে।
শিশুদের অভিভাবকরা বলছেন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আরো বেশি চিন্তায় থাকতে হয়। যে কোন মুহুর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারা চান স্কুল যতদ্রুত সম্ভব স্কুল অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
স্কুলের সহ শিক্ষক জয়দেব পাল বলেন, আমরা অত্যন্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি সব সময়। আতঙ্কে থাকি যদি কোন বাচ্চা গঙ্গার পাড়ের দিকে না চলে যায়। অসহায় অবস্থায় ক্লাস করছি। প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তবে তার ফল এখনো মেলেনি।
হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন শিল্পা নন্দী জানান, বিষয়টা জানি,পরিদর্শন করেছি কয়েকমাস আগে। এক ব্যক্তি জায়গা দান করেছেন স্কুল তৈরির জন্য।টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।ওখানে কোন রকম জায়গা নেই বলেই অসুবিধার মধ্যেও স্কুল করাতে হচ্ছে।
হুগলী থেকে দেবস্মিতা চক্রবর্তীর রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।