দালালের খপ্পরে পড়ে নিজ ভূমি, নিজ গৃহ প্রকল্পের সুবিধা পেলেন না প্রায় ৮৬ টি পরিবার। গৃহহীণ পরিবার যে তিমিরে ছিলেন সেই তিমিরেই থেকে গেলেন। অভিযুক্ত দালালদের দাবি, প্রকল্পের সমস্ত অর্থ না আসার কারনে গৃহ নির্মান সম্পন্ন করা যায়নি।
সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে রাজ্যের গৃহহীণ পরিবারকে সরকারি তিন শতক খাস জমিতে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকায় বাড়ি তৈরি করে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের পন্ডিতপোতা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে ধোলাই বস্তি গ্রামে ৮৬ টি বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে ৩২ টি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক একাউন্টে ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। এলাকার দালাল হিসেবে পরিচিত মহম্মদ জাহিরুদ্দিন এবং মুক্তার আলমদের এই বাড়ি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই দুই দালাল গৃহ নির্মানের কাজ অসম্পূর্ণ রেখে সেখান থেকে চলে আসেন। উপভোক্তারা একাধিকবার স্থানীয় বিডিও থেকে শুরু করে এলাকার বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর দ্বারস্থ হয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উপভোক্তাদের অভিযোগ, বিডিও-র কাছে এবিষয় নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে মহম্মদ জহিরুদ্দিন এবং মুক্তার আলমকে দেখিয়ে দিয়েছেন। অভিযুক্ত দুই দালালের নাগাল না পাওয়ায় তারা হতাশ হয়ে ঘর পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন।
দীর্ঘদিন যাবৎ অর্ধনির্মিত বাড়ি পড়ে থাকায় ঝোপঝাড় জঙ্গল দিয়ে ভরে গেছে। বাড়ি তৈরির নির্মাণ সামগ্রী স্থানীয় বাসিন্দারা নিয়ে চলে গেছেন বলে অভিযোগ। ফলে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা ব্যায়ে নিজ ভূমি, নিজ গৃহ প্রকল্পে ৩২ বাড়ি অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। গৃহহীনেরা বাড়ি না পাওয়ায় শনিবারও তারা সরকারি পূর্ত দফতরের জমিতে জবরদখল করে বাসা বেধে কোনোরকমভাবে দিন চালাচ্ছেন। এপ্রসঙ্গে অভিযুক্ত দালাল মহম্মদ জহিরুদ্দিন জানিয়েছেন, নিজ ভূমি, নিজ গৃহ প্রকল্পে ৮৬ টি বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে ৩২ টি বাড়ি তৈরির জন্য সরকার অনুমোদন দিয়েছিল। বাড়ি তৈরির জন্য উপভোক্তাদের ৭০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল।উপভোক্তাদের একাউন্টে সেই টাকা দেওয়া হয়।উপভোক্তারা সেই টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল।মোট ৭০ হাজার টাকার মধ্যে ১৫ হাজার টাকা রাজমিস্ত্রী বাবদ ব্যায় হয়। বাকি টাকা নির্মান সামগ্রী বাবদ ব্যায় হয়েছিল। প্রকল্পের সম্পন্ন টাকা উপভোক্তাদের না দেওয়ায় গৃহ নির্মানের কাজ অসম্পূর্ন রাখতে হয়।
এপ্রসঙ্গে পন্ডিতপোতা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের প্রতিনিধি ক্ষিতিশ চন্দ্র সিংহ এর অভিযোগ, মহম্মদ জহিরুদ্দিন এবং মুক্তার আলম এই গৃহ নির্মানের টাকা নয়-ছয় করার কারনে নির্মান কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থ প্রদান করে গৃহহীনদের হাতে বাড়ি তুলে দেওয়ার দাবি করেছেন।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে উত্তম পালের রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।