Islampur : বাঘের ভয়ে মৃতদেহ ফেলে উধাও সৎকার সদস্যরা

আরও পড়ুন

শ্মশানে দাহ করার আগেই বাঘের আতঙ্কে মৃতদেহ ফেলে নিজ নিজ বাড়ি ফিরে গেলেন সৎকার করতে আসা প্রতিবেশীরা। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থানার কালনাগিনী এলাকায়। গ্রামবাসীরা বনদফতরের বিরুদ্ধে খামখেয়ালিপনার অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফুঁসছেন।

সূত্রের খবর- সোমবার সন্ধ্যায় কালনাগিনী গ্রামের বিপুল সিংহের এক বৃদ্ধা আত্মীয়ার বার্ধক্যজনিত কারনে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। পরিবার সূত্রে খবর- আতিয়ার মৃত্যু নিয়ে পরিবারের সদস্যরা যখন শোকোস্তব্ধ ঠিক সেই সময় এলাকায় ঘুরে বেড়ানো বাঘটি ওই বাড়িতে ঢুকে একটি গবাদি পশুকে টেনে নিয়ে নিয়ে চলে যায়। এখবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এমন খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা মৃতদেহ সৎকারের জন্য ওই বাড়িতে এলেও বাঘের হানার খবর পেয়ে একে একে সকলেই নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান। বাঘ তাদের বাড়িতেও গবাদি পশু, ছোট ছোট শিশুদের উপর আক্রমণ করতে পারে এই আশঙ্কায়। প্রতিবেশীরা রাতে শ্মশানে যেতে রাজি না হওয়ায় রীতিমতো বিপাকে সিংহ পরিবারের সদস্যরা। এমন ঘটনার পর সৎকার কর্মীদের অভাবে মৃতদেহ বাড়ির উঠোনেই পড়ে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ইসলামপুরের কালনাগিনী গ্রামে বাঘের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই বাঘের হানায় বেশ কয়েকটি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। বনদফতরের তরফে বাঘ ধরার জন্য খাঁচা পাতা হলেও বাঘটি ছিল অধরা। এলাকাবাসীর বক্তব্য-বনদফতর বিষয়টি জেনেও উল্লেখযোগ্যভাবে বাঘবন্দির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। স্থানীয় বাসিন্দা ও আই সি ডি এস কর্মী সুচিত্রা মৈত্র জানিয়েছেন, গ্রামজুড়ে বাঘের আতঙ্কে রয়েছেন অসংখ্য মানুষ। একুশ শতকে দাঁড়িয়ে বাঘের ভয়ে কর্মস্থলে যেতে পারছেন না মানুষ, এটি দেশের লজ্জা (!) কার্যত জীবনকে বাজি রেখে কেউ কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন । গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ- বনদফতরের কর্মীরা নাকি অনেকটা রসিকতার সুরে বাঘের ছবি ফ্রেমবন্দি করার পরামর্শ দিচ্ছেন (!) এলাকায় বাঘ নেই বলেও দাবি বনকর্মীদের । যদিও বনদফতর এর কর্মীদের এমন দাবি মানতে নারাজ সুচিত্রাদেবী। তাঁর কথায়- বাঘের অত্যাচারে তারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাছেন। ইতিমধ্যে তাঁর বাড়ি থেকেও একটি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুচিত্রাদেবী। তাঁর কথায়-বাঘের ছবি তোলা দূরের কথা, বাঘ বাড়িতে এলে রীতিমতো প্রাণ বাঁচানোই দায় হয়ে উঠেছে এলাকার মানুষের। একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা বরুণ বৈদ্য। তাঁরও অভিযোগ- প্রশাসন বাঘ ধরার ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছে। বাঘের আক্রমণে কোনও মানুষের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত বনদফতর কিংবা প্রশাসনের টনক নড়বে না। রাত্রিতে প্রতিবেশীর মৃত্যু হলে সকলেই বাড়ি ছেড়ে বার হতে অরাজি। এই এলাকায় কারও মৃত্যু হলে গ্রামবাসীরা প্রত্যেকেই সমবেতভাবে মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ করেন। এখানেও তারা রাজি। তবে রাতে নয়, দিনে। তাই সকাল না হওয়া পর্যন্ত মৃতদেহ বাড়ির উঠোনেই রাখতে হচ্ছে বিপুলবাবুর পরিবারকে।

মৃতার আত্মীয় বিপুল সিংহ কি বলেছেন শোনাব-

অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা সুচিত্রা মৈত্রের কথা শুনে নেব একবার-

সর্বোপরি বিপুল সিংহের প্রতিবেশী বরুণ বৈদ্যই-বা কি জানিয়েছেন দর্শকবন্ধুদের জনাবো-

তবে বিষয়টি যে এলাকার মানুষকে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় রেখেছে, তা এক রকম পরিষ্কার।

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের কালনাগিনী গ্রাম থেকে উত্তম পালের রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close