রবিবার বিকেলে ডুয়ার্সে ঘুরতে গিয়ে মৃত্যু হল মা ও মেয়ের। এমনই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের গাঠিয়া চা-বাগান সংলগ্ন গাঠিয়া নদীতে। উত্তাল পাহাড়ি নদীর হড়পা বানের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয় মা ও মেয়ের। মৃত মায়ের নাম ক্যামেলিয়া বিশ্বাস (৪০) ও মেয়ে রাজ্যাইয়া বিশ্বাস (১৩)। সূত্রের খবর, তাদের বাড়ি শিলিগুড়িতে।
ডুয়ার্সের নদী ও ঝোড়াগুলির উৎসস্থল উত্তরের কালিম্পং জেলা এবং ভূটানের পাহাড়ি এলাকা। সাধারণত,এই সময় পাহাড়ি এলাকায় প্রবল বর্ষণ হয়। বৃষ্টির প্রবল জলধারা উত্তাল গতিতে নদী দিয়ে নিচের দিকে নেমে আসতে শুরু করে। অনেক সময়ই দেখা যায় পাহাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে অথচ সমতল এলাকায় সূর্যের প্রখর তাপ আর তখন আচমকাই হড়পা বান দেখা দেয়। সেই হড়পা বানেই ঘটে এমনই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
এদিকে গাঠিয়া নদীর পাশেই রয়েছে গাঠিয়া চাবাগান। সেই চা বাগানের সহকারী ম্যানেজার রুপক বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যরা সহ বেশ কয়েকজন কলকাতা থেকে ডুয়ার্সে বেড়াতে এসেছিলেন।
ডুয়ার্সে ঘুরতে এসে অনেকেই আনন্দে পাহাড়ি নদীতে নেমে পড়েন। স্থানীয় সূত্রে খবর, সুন্দর কলোতানে ভরা পাহাড়ি নদী দেখেই এদিন ৮ জন গাঠিয়া নদীতে স্নান করতে নামেন। আর সেসময় নদীর আশপাশে বেশ কয়েকজন স্থানীয় মানুষও ছিলেন।যখন তারা নদীতে নামেন, তখন নদীর জলস্রোত স্বাভাবিকই ছিল। আচমকাই নদীর জল বেড়ে যায়। দেখা দেয় হড়পা বান। বহিরাগত ভ্রমণকারীরা হড়পা বানের স্বরূপ বুঝতে পারেননি। যারফলে প্রবল জলস্রোতে ভেসে যান ৮ জন। স্থানীয়রা চেষ্টা করে ৬ জনকে উদ্ধার করলেও মা ও মেয়ে ভেসে যান ভাটির টানে নিচের দিকে। এরপর বিকেলে অনেক নিচে ছাড়টন্ডু সংলগ্ন এলাকা থেকে মা ও মেয়ের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। এমন ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শচীন সরকার ঠিক কি বলেছেন শুনব-
প্রসঙ্গত, নাগরাকাটা থানার আইসি কৌশিক কর্মকার বলেন- “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এদিন গাঠিয়া নদীতে ৮ জন স্নান করতে নেমেছিলেন,৬ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও একজন মহিলা ও তার মেয়ে ভেসে যান। দুটি মৃতদেহই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” সাধারণ মানুষের বক্তব্য- ভ্রমণকারীরা সতর্ক না হলে অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা প্রায় অসম্ভব।