মায়ের শেষ কৃত্যের জন্য খুনের সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে পেরোলে নিয়ে আসা হল পুলিশি পাহারায়। আসামিকে দেখতে এলাকায় স্থানীয়দের উপচে পড়া ভিড়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে এলাকাজুড়ে।
সূত্রের খবর, গত ৮ মাস আগে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা স্টেশনে ঘটে যাওয়া নৃশংস মোজাম্মেল হত্যা কাণ্ডের অভিযুক্ত ১২ জনের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করে মালদা কোর্ট। এরপর ওই ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিদেরকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার গভীর রাতে এই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে থাকা হরিশ্চন্দ্রপুরের রাঙ্গাইপুর গ্রামের বাসিন্দা মালেক কস্তুর ওরফে বাবলুর মা মারা যাওয়াতে তাকে প্যারোলে হরিশ্চন্দ্রপুর নিয়ে আসে বালুরঘাট থানার পুলিশ। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদূত গজম এবং স্থানীয় শাসকদলের নেতারাই তাকে তার মায়ের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকার ব্যবস্থা করে দেন। শুক্রবার এই যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামিকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছিল। আসামিকে দেখতে ওই এলাকা-সহ আশেপাশের গ্রাম থেকেও বাসিন্দারা দেখতে আসেন। শুক্রবারই তাকে তার মৃত মায়ের শেষ কার্যসম্পন্ন করার পরেই নিয়ে পুনরায় বালুরঘাট সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য বিশাল পুলিশ বাহিনীও মোতায়েন করা হয়।
প্রসঙ্গত, বছর আটেক আগে জমি বিবাদের জেরে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার রাঙ্গাইপুর গ্রামের এক ইটভাটার মালিক মোজাম্মেল হককে মালদা কাটিহারগামী রেলগাড়ি থেকে ভালুকা রোড স্টেশনে নামিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে এলাকার একদল দুষ্কৃতী। ভোজালীর কোপে তার দেহকে টুকরো টুকরো করে কেটে বস্তা বন্দী করে দৌলতনগর সেতুর নিচে ফেলে দেওয়া হয়। ওই খুনের ঘটনায় এলাকার বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবার। দীর্ঘদিন যাবৎ কোর্টে এই নিয়ে কেস চলার পর গত ৮ মাস আগে রাঙ্গাইপুর গ্রামেরই ১২ জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করে মালদা জেলা আদালত। এই সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই মালেক কস্তুর ওরফে বাবলু।
এপ্রসঙ্গে বাবলুর স্ত্রী জুলেখা বিবি জানান- তার স্বামী নির্দোষ। তাকে চক্রান্ত করে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করানো হয়েছে।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মনসুর রহমান বলেন, স্থানীয় এক খুনের সঙ্গে অভিযুক্ত বাবলু। শুক্রবার তার মাকে মাটি দেওয়ার জন্য বালুরঘাট পুলিশ তাকে গ্রামে নিয়ে এসেছে। এদিন তার মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেই তাকে সঙ্গে করে পুনরায় জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভারতবর্ষের সংবিধান অনুযায়ী যে কোনও আসামিরই মানবাধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে পুলিশ যথাযোগ্য তার দায়িত্ব পালন করেছে।
মালদা থেকে অভিষেক সাহার রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।