মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যর মূর্তিতে মাল্যদান করে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে ৫০৮ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী রামকেলি মেলার উদ্বোধন হল মঙ্গলবার বিকেলে। মালদা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই মেলার আয়োজন করা হয়। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া, পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী-সহ অন্যান্য আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হল ৫০৮ বছরের পুরনো মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেবের আগমনের স্মরণে মালদার গৌড়ের রামকেলি মেলা। এই মেলায় শুধু জেলার নয়, দেশ-বিদেশ থেকেও বহু মানুষ এই মেলায় আসেন। জানা গেছে, প্রায় ৫০৮ বছর আগে বৃন্দাবন যাওয়ার পথে মালদা জেলায় আসেন মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য দেব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত শ্রেণির মানুষকে নিয়ে তাঁর বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার করতে থাকেন। ঠিক সেই সময় সুলতান হুসেন শাহের মন্ত্রীসভার দু’জন শ্রী চৈতন্যদেবের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তারা রূপ গোস্বামী ও সনাতন গোস্বামী নামে পরিচিত হন। সেই সময় থেকে তাঁরা বৈষ্ণব ধর্মের প্রচার শুরু করেন। মহাপ্রভুর স্মৃতিতে মালদার গৌড়ের রামকেলিতে প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তিতে মেলা শুরু হয়। যেখানে দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ এই মেলায় ছুঁটে আসেন।
মঙ্গলবার থেকে প্রশাসনিকভাবে শুরু হয় এই রামকেলি মেলা। রামকেলি এলাকায় চৈতন্যদেবের পূর্নাবয়ব মূর্তিতে মাল্যদান করে আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা হয় এই মেলার। সরকারিভাবে তিনদিনের মেলার অনুমতি থাকলেও মেলা চলে প্রায় সাত দিন ধরে।
দূর-দূরান্ত থেকে মেলায় ছুটে আসেন ভক্তরা। অন্যদিকে, বিভিন্ন জেলা থেকে নানান ধরনের জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। মেলায় দৃষ্টি আকর্ষণ করে মৃদঙ্গের দোকান। পাশাপাশি, তীব্র গরমে ভেড়ার লোমের তৈরি কম্বল কিনতেও দেখা যায় দর্শনার্থীদের। হাজার হাজার বছরের স্মৃতিসৌধ ইতিহাসকে সাক্ষী রেখে গৌড়ের রামকেলি এলাকায় বহু নিদর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। মেলার পাশাপাশি দর্শনার্থীরা সেই ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতেও ভিড় জমান।
অপূর্ব বর্মনের রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা