চাকরি জীবনের অবসরের পরও ৮ বছর যাবৎ বিনা পারিশ্রমিকে নিয়মিত বিদ্যালয়ে পড়িয়ে যাচ্ছেন মালদার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্বপ্না ঘোষ। ছাত্র-ছাত্রীদের স্নেহের ভালোবাসায় আবদ্ধ রয়েছেন তিনি। সন্তান স্নেহে আজও তাদের স্বইচ্ছেয় পাঠদান করে চলেছেন এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা।
সূত্রের খবর, এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্বপ্না ঘোষ রায় দাস মালদার ২ নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনী এলাকার বাসিন্দা। তার স্বামী পীযূষ দাস পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী। ১৯৮৯ সালে শিক্ষকতার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা হিসেবে কমলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জীবনে প্রবেশ করেন তিনি। ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি খাতায়-কলমে বিদ্যালয় থেকে অবসর নেন তিনি। তবে বাড়িতে বসে থাকেননি। অবসর গ্রহণের পরের দিন থেকে নিয়ম মেনে ওই বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করে চলেছেন তিনি। অবসর গ্রহণের প্রায় আট বছর কেটে গেলেও আজও সেই দায়িত্ববোধ পালন করে চলেছেন তিনি। নিয়মিত বিদ্যালয়ে গিয়ে রোস্টার মেনেই অংকের ক্লাস নিয়ে চলেছেন খুদে পড়ুয়াদের। পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের অংকের ক্লাস নেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকার এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বর্তমান শিক্ষক সমাজে বিভিন্ন অভাব অভিযোগ, সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ তৈরি করে চলেছেন মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের কমলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অংকের শিক্ষিকা স্বপ্না ঘোষ রায় দাস। তার এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাকে কিছু পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য আবেদন করা হলেও তিনি তা মঞ্জুর করেননি। এমনকি সরকারি অতিথি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও তিনি রাজি হননি। নিয়মিত অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মত ক্লাস নিয়েই চলেছেন তিনি।
এবিষয়ে ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্বপ্না ঘোষ রায় দাস বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা তার কাছে সন্তানের মতো। পড়ানো তার নেশা, পড়িয়ে তিনি মানসিক শান্তি পান। তাই অবসর গ্রহণের পরও থেমে থাকেননি তিনি। নিয়মিত ক্লাস নিয়ে চলেছেন। যতদিন শরীর সুস্থ থাকবে ততদিন পড়িয়ে যেতে চান।
ফোর্টিন টাইমলাইন, মালদা।