আমের মরশুমে আমের ক্ষতিতে ক্রমশই আতঙ্ক বাড়ছে আম চাষিদের। উত্তর মালদার চাঁচলে দয়ে বা দুধিয়া পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে আম গেছে। ঝড়ে যাচ্ছে আম। মাথায় হাত আমচাষিদের।গত কয়েকদিনের তীব্র দাবদাহের ফলে এই দয়ে বা দুধিয়া পোকার উপদ্রব বেড়েছে। আর যে কারণে মালদহের অর্থকরী ফসল আমচাষ রীতিমতো ক্ষতির মুখে। চিন্তিত মালদা জেলা উদ্যানপালন ও বাগিচা দফতরের আধিকারিকেরা। জরুরী ভিত্তিতে এই পোকা উপদ্রব কমাতে আমচাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মালদা জেলাতে ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়। এই বছর চার লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। দয়ে পোকা আক্রমণের ফলে আম উৎপাদনের যে টার্গেট জেলা উদ্যান পালন ও বাগিচা দফতরের কর্তারা আশা করেছিলেন তাতে ভাটা পড়তে পারে এমনই আশঙ্কা করছেন তারা।
এবছরের গোড়াতে আম উৎপাদনে অনুকুল আবহাওয়ার ফলে চাষি থেকে ব্যবসায়ী সকলেই খুশিতে ছিলেন। সময়ের আগেই মালদার আমবাগান মুকুলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আমজনতাও মালদার আমের স্বাদ স্বল্প ব্যয়ে পাবেন বলে আশা করেছিলেন অনেকই। কিন্তু গত কয়েকদিনের তীব্র দাবদাহে কপালে ভাঁজ ফেলেছে সকলের। মালদহের চাঁচলের সিহিপুরের একাধিক আম বাগানের আমে দেখা গিয়েছে এই দয়ে বা দুধিয়া পোকার আক্রমণ। আমের গাছ বেয়ে গুটি গুটি সাদা পোকা আমের বোটায় গিয়ে সব রস শুষে নিয়ে আমকে ঝরিয়ে দিচ্ছে। আর যা নিয়ে চিন্তিত আম চাষিরা।
মালদাহের চাঁচলের সিহিপুরের আম চাষি অনুকূল প্রামাণিক বলেন, যে হারে এই পোকার উপদ্রব বেড়েছে। তাতে আমকে বাঁচিয়ে রাখাই দায় হয়ে দাড়িয়েছে। ঋণ নিয়ে আমচাষ করেছিলাম। প্রথমে মুকুল ভাল হওয়ার আশা করেছিলাম, এবার হয়তো ফলন ভাল হবে। দুটো পয়সার মুখ দেখব। আজ হতাশ। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন- দ্রুত এইপোকা উপদ্রব থেকে আম রক্ষা করার ব্যবস্থা করা হোক।
অন্যদিকে আমচাষি অনিল দাস এর জন্য জেলা উদ্যান পালন দফতরকে দায়ী করেছে। উদ্যানপালন দফতরের আম চাষিদের নিয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। আম চাষ নিয়ে কোনও প্রশিক্ষণ বা সহযোগিতা তারা উদ্যানপালন দফতরের কাছ থেকে পাননি বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা।
জেলা উদ্যান পালন বাগিচা দফতরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক বলেন, পোকার উপদ্রব শুরু হয়েছে। তীব্রদাবদাহও চলছে। এই সময় সংবেদনশীল পোকা মারার কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেন। এছাড়া নিম তেল জাতীয় জিনিস জলে মিশিয়ে স্প্রে করলে এই দয়ে পোকা উপদ্রব কমে যাবে।
তবে উদ্যানপালন দফতর পোকার আক্রমণ নিয়ে মুখে যাই বলুক না কেনও আমি চাষিদের ক্ষতি চরম যে পর্যায়ে পৌঁছল সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
উত্তর মালদার চাঁচল ঘুরে দেবাশীষ দাসের রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।