Malda : ঈদে ফেরত ছেলের নিথর দেহ !

আরও পড়ুন

বাড়িতে রয়েছে অবিবাহিত বোন,টাকার খুব দরকার।এবার ঈদে বাড়ি আসব না।পাঁচ হাজার টাকা তোমার একাউন্টে পাঠিয়েছি।তা দিয়ে ঈদের জন‍্য তোমার,বাবা ও বোনের নতুন পোশাক নিয়ে নিও।সাতদিন আগে এভাবেই মায়ের সাথে কথা হয়েছিল বড় ছেলের।তারপরেই ঘটে গেল বিপত্তি।চেন্নাইয়ের তৃণমালায়ে বিল্ডিং-এ নির্মাণের কাজ করার সময় বহুতল থেকে পড়ে যায় ওই যুবক।আশঙ্কাজনক অবস্থায় চারদিন ধরে তৃণমালায়ের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার শেষ নিঃশ্বাস ত‍্যাগ করে।

মৃত শ্রমিকের নাম আবু তাহের(বয়স ২২)।ছোটো ভাই সাদ্দাম হোসেনকে নিয়ে চেন্নাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।দাদার সাথে ভাই যোগদানের কাজে ছিল।ঘটনার খবর গ্রামের বাড়ি মালদহের মালতিপুর বিধানসভার ডাহুকা গ্রামে পৌঁছতেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এমন ঘটনায় ডাহুকা গ্রামে ঈদের চাঁদ যেন ঘোলাটে হয়েছে।অভাব দূর করার লক্ষ‍্যে ঈদে বাড়ি আসার পরিকল্পনা না থাকলেও ফিরছে নিথর দেহ।ময়নাতদন্তের পর সোমবার দাদার দেহ নিয়ে ফিরছে ছোটো ভাই সাদ্দাম।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,মালতিপুরের ডাহুকা গ্রামের হামিজুদ্দিন সাহেব আগে দিনমজুরের কাজ করত।বয়স ষাট পেরিয়েছে।দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।বড় মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে।বাড়িতে রয়েছে আরোও একটি মেয়ে।সংসারের উপার্জনকারী বলতে দুই ছেলে আবু তাহের ও সাদ্দাম হোসেন।চাষের জমি নেই,সম্বল বাস্তু ভিটে টুকুই।প্রসঙ্গত বাড়িতে অভাব অনটন দেখেই ভিনরাজ‍্যে পাড়ি দেয় দুইভাই।দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে সেখানে কর্মরত।আট মাস আগে বাড়ি ফিরে ফের চেন্নাইয়ে গিয়েছিল দুইভাই।তাদের উপর নির্ভর করছিল গোটা পরিবার।উৎসবের আবহে বড় ছেলের অকাল মৃত‍্যুতে সব যেন বেরঙিন হয়ে গেল।

মা তাহেনুর বিবি বলেন,ছেলের সাথে কথা হয়েছিল।ঈদে বাড়ি আসবে না।তাই নতুন পোশাক কেনার জন‍্য টাকাও পাঠিয়েছিল।উৎসবে ছেলের নিস্প্রাণ দেহ ঘরে ফিরবে।ভাবতে পারিনি।বাবা হামিজুদ্দিন ছেলের মৃত‍্যুর শোকে দিশেহারা।সারা মাস রোজা করে ঈদে ছেলের কফিনবন্দি দেহ দেখার অপেক্ষায় রয়েছে।মোবাইলে ছেলের দেহ দেখে কান্নায় লুটিয়ে পড়েছে বাবা।

ঘটনার খবর পেয়ে শোক প্রকাশ করেছেন মালতিপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি।তিনি বলেন,দেহ ফিরছে,শোকার্ত পরিবারকে সমবেদনা জানায়।দেহ আসলেই তাদের বাড়িতে যাব।পরিবারটি যেন সবরকম সরকারি সাহায্য পায় সেদিকে জোড় দিব।স্থানীয় বাসিন্দা মুকলেসুর রহমান,মিন্টু আলীরা জানান,পরিবারটি অসহায়।মৃতের বাবার ষাট পেরোলেও বার্ধক‍্য ভাতা পায়নি।বাড়িটিও নড়বড়ে।সরকার সাহায্যের হাত বাড়ালে পরিবারে কিছুটা হলেও সুরাহা হবে।

- Advertisement -

সম্পর্কিত খবর

- Advertisement -

ট্রেন্ডিং

close