গ্রামে প্রায় ৪০টি পরিবারের বসবাস। প্রত্যেকেরই কাঁচা বাড়ি। কিন্তু একজনেরও নাম নেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায়। ঘরের জন্য একাধিকবার পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে ক্ষুদ্ধ হয়ে মঙ্গলবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন গ্রামের বধূরা।বিক্ষোভের মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারিও দেন গ্রামবাসিন্দারা। এমন ঘটনার কথা সামনে আসতেই শুরু হয় যায় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। টাকার বিনিময়ে নাম নথিভুক্ত করেছে তৃণমূল পরিচালিত খরবা গ্রাম পঞ্চায়েত, কটাক্ষ বিজেপির।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্র সরকারের তরফে পশ্চিমবঙ্গে আবাস যোজনার ঘর নির্মাণ করার জন্য রাজ্যকে ৮২০০ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। তাতে ১১ লক্ষ্যেরও বেশি বাড়ি নির্মাণের কথা হয়েছে। সেইমতো রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে সার্ভের কাজ। কিন্তু মালদার চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের রঙপুর মহালদার পাড়ায় কারও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় নাম নেই। গত ২০১৮ সালে এলাকায় কেউ সার্ভে করতে যায়নি বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। হাতেগোনা কিছু মানুষের টাকার বিনিময়ে গোপনে সার্ভে করা হলেও তাদেরও নাম নেই তালিকায়। তার জেরে রীতিমতো হতাশাগ্রস্থ গ্রামবাসীরা। এই গ্রামে অনেকেরই কুঁড়েঘর ভেঙে পড়ছে, আবার অনেকেরই দেওয়ালে দেওয়ালে তৈরি হচ্ছে গর্ত। চরম অসহায়ের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে রঙপুর গ্রামের চল্লিশটি পরিবার। যদিও সেই কাঁচা বাড়িগুলির মধ্যে হাতেগোনা দুয়েকটি বাড়ি পাকা রয়েছে। সরকারি আবাস যোজনার তালিকায় নাম না থাকায় বেজায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। ওই গ্রামে অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর ও মাছ বিক্রির পেশার সঙ্গে যুক্ত। গরীব হয়েও আবাস যোজনার ঘর থেকে কেনও তারা বঞ্চিত? সেই প্রশ্ন উঠছে চাঁচলবাসীদের মনে।
খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সইমুদ্দিন আলি সাফ জানিয়েছেন, আবাস যোজনার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করা নিয়ে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা নেই। ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে ভিআরপি কর্মীরা এলাকায় সার্ভের দায়িত্বে ছিলেন। কেনও এমনটা হল তা তার জানা নেই।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ শর্মা কটাক্ষের সুরে বলেন, আবাস যোজনায় ঘুঘুর বাস। টাকার বিনিময়ে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত গুলি আবাস যোজনা বিক্রি করছে। যার কারনে বঞ্চিত থাকছে গরীব অসহায় মানুষগুলি।
অন্যদিকে চাঁচল ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি সেখ আফসার আলি জানান, ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য কংগ্রেসের প্রতীকে জয়ী হয়েছিল। সদ্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। দুর্নীতিতে যুক্ত থাকলে দল রেয়াত করবেনা।
ফোর্টিন টাইমলাইন, মালদা।