প্রয়াত হলেন অন্যতম বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান পিয়ারলেস গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল কান্তি রায়। গতকাল রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় বহুদিন ধরেই ভুগছিলেন তিনি। মাঝে মধ্যেই চেক-আপে যেতে হত চিকিৎসকের কাছে। শনিবার রাতে অবস্থা অতিরিক্ত খারাপ হওয়ায় তাঁকে পিয়ারলেস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে। গতকাল অর্থাৎ রবিবার রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র পিয়ারলেস গ্রুপই নয়, সুনীল কান্তি বাবু যুক্ত ছিলেন আরও নানারকম সমাজমূলক কাজের সঙ্গে। বেশ কয়েক বছর তিনি বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সদস্য হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তাছাড়াও, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ডিরেক্টর বোর্ডের সদস্য ছিলেন সুনীল বাবু। এছাড়াও একাধিক ক্ষেত্র যেমন- আর্থিক, বিমা, স্বাস্থ্য, হোটেল, অটোমোবাইল, আবাস, সিকিউরিটিজ প্রভৃতিতে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে।
সুনীল কান্তি বাবুর পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, পুত্র, কন্যা এবং তাঁর দুই নাতি-নাতনি। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোকাহত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন জানিয়েছেন, “সুনীল কান্তি রায়ের মৃত্যুতে বাংলার শিল্প এবং বাণিজ্য জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। তাঁর আত্মীয় পরিজনদের প্রতি আমি আমার সমবেদনা জানাই। সুনীল যেখানেই থাকুন, শান্তিতে থাকুন।”
এদিন প্রয়াত শিল্পপতির উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম মহাশয়। তিনি এদিন বলেন, “সুনীল কান্তি রায়ের প্রয়াণে বাংলার ব্যবসা বাণিজ্য মহলে একটা যুগের অবসান ঘটল। তাঁর পরিবার পরিজন এবং বন্ধুদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। ওঁনার আত্মার শান্তি কামনা করি। আমি খবরটা পেয়ে খুবই বিষণ্ণ হয়ে পড়েছি৷”
প্রসঙ্গত, এই বিশিষ্ট শিল্পপতির পড়াশোনা পুরোপুরি কলকাতাতেই। কলকাতার সিটি কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। তাঁর দাদা বি.কে রায়ের মৃত্যু হয় গত ১৯৮৫ সালে। তখন থেকেই সুনীল বাবু পিয়ারলেস গ্রুপের কর্মভার নিজের কাঁধে তুলে নেন। এরপর টানা দীর্ঘ ৩৭ বছর তিনি গ্রুপের দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে সমাজকল্যাণমূলক কাজের জন্য তিনি ‘পদ্মশ্রী‘ সম্মানে ভূষিত হন।