বউভাতের অনুষ্ঠানের বদলে অনাথ শিশু, কিশোর-কিশোরীদের উদরপূর্তি করিয়ে আত্মতৃপ্তি অনুভব করতে চান প্রবাসী বাঙালি অর্জক ভট্টাচার্য। রায়গঞ্জের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রয়েছে ‘রায়গঞ্জ চ্যারিটিবল অনাথ-ও-বৃদ্ধাশ্রম’।
আগামী ২৪ মে, মঙ্গলবার দুপুরে সাকুল্যে ৩৫ জন শিশু, কিশোর-কিশোরীকে খাওয়ানোর পরিকল্পনা করেছেন প্রবাসীর মা রত্না আচার্য (ভট্টাচার্য)। এ বিষয়ে রত্নাদেবী ‘টাইমস ফোর্টিন বাংলা’-কে জানিয়েছেন- সমস্ত অভিভাবক অভিভাবিকারা তাদের সন্তানের বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় বিপুল পরিমান অর্থ ব্যায় করে থাকেন। কিন্তু তাতে দোষের কিছু নেই। তারা যদি এমন অসহায় শিশু, কিশোর-কিশোরীদের খাওয়াতে পারেন, তা কিন্তু কল্যানের। যদি এজাতীয় কার্যক্রম দেখে বাকি দর্শকেরাও উদবুদ্ধ হন, তবে তিনি সফল বলে মন্তব্য করেছেন শ্রীমতি আচার্য (ভট্টাচার্য)।
অন্যদিকে প্রবাসী বাঙালি তথা গবেষক অর্জক জানিয়েছেন- আমার মায়ের ইচ্ছে ছিল – সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কিছু করা। সেই কারনে তাদের মা-ছেলের উদ্যোগে অনাথ আশ্রমের আবাসিকদের একবেলা খাওয়ানোর প্রচেষ্টা। প্রসঙ্গত, শ্রী ভট্টাচার্য এবং তার স্ত্রী অর্পিতা রাউথরে দু’জনেই আমেরিকায় থাকেন। বর্তমানে অর্জক গবেষণা করছেন ওয়াসিংটন স্টেট এর পুলম্যানের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়াসিংটন স্টেট ইনিভার্সিটি থেকে। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী অর্পিতা রাউথরে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরের পিট্স্ বার্গের কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি থেকে ‘রোবোটিক’ নিয়ে গবেষণা করছেন। চারমাস পর পর দু’জনের একমাস করে ছুটি থাকে। তারা সেই সময় একে অপরের আস্তানায় গিয়ে ছুটি কাটান। সেটাও উড়োজাহাজে করে যেতে হয়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারের অনুষ্ঠান নিয়ে অর্জকের স্ত্রী অর্পিতারও পূর্ণাঙ্গ সমর্থন রয়েছে। ভিসার সমস্যার কারনে অর্পিতা আসতে পারেননি। গবেষক দম্পতি ইতিমধ্যেই ভূবনেশ্বরের ‘ক্রিয়াযোগ ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দুটি শিশুর লেখা পড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। তারা ফি-মাসে বিদেশ থেকে সেই অর্থ পাঠিয়ে
দেন ভূবনেশ্বরে। তারা গত ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর অতিমারী করোনার সময় সামাজিক মতে সুদূর আমেরিকাতেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সেই থেকে সেবার মানসিকতা মেনে চলেছেন এই দম্পতি। তাদের একের পর এক এহেন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রায়গঞ্জের অসংখ্য মানুষ।