বিশ্ব উষ্ণায়নের করাল থাবা এবার রাজ্যের পাশাপাশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে রায়গঞ্জ শহরেও। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতেই ৩৯ থেকে ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকছে শহরে। মূল রাস্তায় লোক চলাচল লক্ষ্য করা গেলেও পাড়ার ওলিগুলি বেলা বাড়তে না বাড়তেই শুনসান হয়ে যাচ্ছে। একান্ত প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে বেরচ্ছেন না কেউই। ফলত ফাঁকা দোকানে ঝিম পারছেন দোকানদাররা। যারা বেরচ্ছেন রোদ চশমা, ছাতা বা রোদের প্রবল তাপ থেকে বাঁচতে ঢেকে নিচ্ছেন মুখ। এমনি এক বামুহা নিবাসী এক পথ চারি জানান এই গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সবারই
এই প্রখর রোদে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন ট্রাফিক পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ বেশ কয়েকজন। রোদের তাপে মুখ ঢাকছেন তারাও, রুমালবার করে মুছে নিচ্ছেন ঘাম। রোদ গরম থেকে বাঁচতে পথচারীরা চুমুক দিচ্ছেন ফলের জুস, আখের রস, লস্যি প্রভৃতিতে। রায়গঞ্জের অশোকপল্লী নিবাসী বর্ষীয়াণ নাগরিক বাদল চন্দ্র পাল বলেন এই রকম গরম এই সময়ে আগে ঘটে নি। অবিলম্বে গাছ কাটা রোধ ও বৃক্ষরোপনের ওপর জোর না দিলে ভবিষ্যত আরও ভয়াবহ বলেন তিনি।
দেবীনগর নিবাসী পড়ুয়া সৌমিত্র ঘোষ বলেন আধুনিকীকরণের নামে নিজেদের ক্ষতি করে চলেছি আমরা। তিনিও জোর দেন বৃক্ষরোপনের ওপর।
নির্বিচারে গাছ কেটে চলছে বহুতল বাড়ি নির্মাণ। কোথাও আবার ঝাঁ চকচকে রাস্তা। কোথাও আবার পাঁচতারা রেস্তরাঁ, মল, এন্টারটেনমেন্ট জোন। সাধারণ মানুষের চোখে যা একপ্রকার উন্নয়ন।
আরণ্যক উপন্যাসের গোড়াতেই বিভূতিভূষণ জানিয়েছিলেন – “স্বচ্ছন্দ প্রকৃতির লীলাভূমি আমার হাতেই বিনষ্ট হইয়াছিল, বনের দেবতারা সেজন্য আমায় কখনও ক্ষমা করিবেন না জানি। নিজের অপরাধের কথা নিজের মুখে বলিলে অপরাধের ভার শুনিয়াছি লঘু হইয়া যায়। তাই এই কাহিনীর অবতারণা।” এই বিশ্বউষ্ণায়ন ও তার প্রেক্ষাপটের ইতিহাস সম্পর্কে জানান প্রসিদ্ধ চিকিৎসক ডক্টর জয়ন্ত ভট্টাচার্য। তিনি পরিষ্কার বলেন বৃক্ষ রোপনের ওপর জোর না দিলে কুড়ি বছর পর এই উষ্ণতা এক ভয়াবহ আকার ধারণ করতে চলেছে।
রায়গঞ্জ থেকে প্রবল সাহার রিপোর্ট, টাইমস ফোর্টিন বাংলা।