গতকাল শুক্রবার রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারীকে নিজাম প্যালেসে ডেকে জেরা করে CBI (Central Bureau of Investigation)। এদিনের পর ফের শনিবার তাঁকে তলব করে CBI। শুক্রবার সকাল ১০টা বেজে ৪০ মিনিটে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার পরেই তাঁকে জেরা করা হয়। রাত ৮টা বেজে ২৫ মিনিট নাগাদ তাঁর জিজ্ঞাসাবাদপর্ব শেষ হয়। নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কোনও কথার সেরকম জবাব দিতে চাননি তিনি। সূত্রের খবর, হাইকোর্টের রায়ে চাকরি খোয়ালেন মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা।
শুক্রবার জেরার পর ফের জেরার মুখোমুখি পরেশ চন্দ্র। CBI-এর পক্ষ থেকে ফের তাঁকে শনিবার ফের তলব করা হয়। জানা গেছে, শুক্রবার রাতে তিনি MLA হস্টেলে ছিলেন। গতকাল হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়দানের ফলে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে স্কুলের চাকরির থেকে বরখাস্ত করা হয়। সঙ্গে তাঁকে যাবতীয় বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। জানা গেছে, তাঁকে দুটি কিস্তিতে তাঁর পুরো বেতন ফেরত দিতে হবে।
অভিযোগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মেধাতালিকায় অঙ্কিতার নাম ছিল না। কিন্তু, তারপরেও তিনি কোচবিহারের স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে অঙ্কিতা স্কুলের চাকরিতে যোগদান করেন। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপরেই হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁকে ৪১ মাসের বেতন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। ৭ জুন প্রথম কিস্তি এবং ৭ জুলাই দ্বিতীয় কিস্তি জমা দেওয়ার জন্য তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার ফলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও তৃণমূলের মোতে পুরো ঘটনাকেই ‘ষড়যন্ত্র’ বলা হচ্ছে।
হাইকোর্টের রায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এই রায়ে খুশি গোটা বাংলার মানুষ। কারণ অশিক্ষিত মেয়ে পরীক্ষায় পাশ না করে, তালিকায় নাম না থেকে হঠাৎ করে যদি কোথাও চাকরি পায় সেটা খারাপ। তার কারণ হল যেই স্কুলেই তিনি চাকরি পান না কেন সেখানে তো আমার মেয়ে, বোন পড়াশোনা করে। আর কোনও স্কুলের শিক্ষিকার যদি যোগ্যতা না থাকে তাহলে বাকিরা তাঁর থেকে কী শিখবে? তাই বলব এই ধরনের শিক্ষক-শিক্ষিকা যেখানে রয়েছেন সেখানে আমার মেয়ে-বোনকে পড়াতে চাই না।” এক চাকরি প্রার্থী শ্রেয়া দে বলেন, “আমরা চাই আগামীদিনে যেন চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতি মুক্ত হয়। আর সবাই যেন তাঁর যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পান।”
প্রসঙ্গত, সিঙ্গল বেঞ্চের ‘পদত্যাগ করা উচিত’ মন্তব্যে আপত্তি তুলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। তদন্তকারীরা এই মামলায় পরেশ অধিকারী এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার কথা চিন্তাভাবনা হচ্ছে। এই কথা শোনা গেলেও নির্দিষ্টভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।