রায়গঞ্জে সাংবাদিক নিগ্রহ ও শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মার বিরুদ্ধে ”এক্তিয়ার বহিৰ্ভূত” মন্তব্য করায় সাসপেন্ড হতে হ’ল পুলিশ কনস্টেবল দেবব্রত রায়কে। তাকে কমিশনার অফ পুলিশ, শিলিগুড়ি-র রিজার্ভ অফিস থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুন, বুধবার বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ উত্তর দিনাজপুরের ১১ জন সাংবাদিক একটি খবর সংগ্রহ করতে যান রায়গঞ্জের কাছিমোহায়। সেখানে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল দেবব্রত রায় আচমকা বাবাকে ফেলে দিয়ে রীতিমতো ‘সিনক্রিয়েট’ করে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। ভেঙে দেন ক্যামেরা, চ্যানেল আইডি-ও। ছিনিয়ে নেন হেডফোন ইত্যাদি। এদিন অভিযুক্ত কনস্টেবল দেবব্রত রায় রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় ৫ জন সাংবাদিকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঘুষি মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন এবিপি আনন্দ-র সাংবাদিক সুদীপ চক্রবর্তীর। ঘাড়ে আঘাত করেন সুণীতেন্দ্রনাথ রায় ওরফে সুমনকে, আক্রান্ত হন টিভি-নাইন বাংলার সাংবাদিক রুপক ঘোষ, জী ২৪ ঘন্টার ভবানন্দ সিংহ-সহ মোট ৫ জন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিন জনকে ছেড়ে দিলেও মাথায় আঘাত গুরুতর হওয়ায় এবিপি আনন্দ-র সাংবাদিক সুদীপ চক্রবর্তী-কে আইসিসিইউ-তে ভর্তি করতে হয়। করতে হয় সিটিস্ক্যানও। নিউজ টাইম বাংলার চিত্র সাংবাদিক সুমন ঘাড়ে আঘাত পেয়ে ভর্তি ছিলেন রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। পরদিন তারা ছাড়া পান। অভিযোগ, সুদীপবাবুর সিটি স্ক্যান রিপোর্ট বিকৃত করতে সহায়তা করেছে রায়গঞ্জ থানার ২ পুলিশ অফিসার। উদ্দেশ্য ছিল- অভিযুক্ত শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট-এর কনস্টেবল দেবব্রত রায়কে জামিনে ছাড়িয়ে নেওয়া। সেই উদ্দেশ্য সফল হওয়াতেই রীতিমতো বিস্মিত হন রায়গঞ্জের প্রবীণ আইনজীবীরা। ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত হন তারা। পরদিন, শুক্রবার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেন জেলার সাংবাদিকরা।
এই আন্দোলনের জেরেই আজ, শনিবার শিলিগুড়ির কমিশনার অফিসে মিটিঙে বসেন সংশ্লিষ্ট অফিসের আধিকারিকরা। তারা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল দেবব্রত রায়কে সাসপেন্ড করে দেন। এই ঘটনায় খানিকটা হলেও ব্যাক ফুট-এ রইলেন রায়গঞ্জ থানার আই সি সৌরভ সেন এবং তারই অধীনস্ত সাব-ইন্সপেক্টর মহম্মদ মুর্তাজা। যারা কলকাঠি নেড়ে অভিযুক্ত কনস্টেবলকে জামিন পেতে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছিলেন বলে অভিযোগ।