কালিয়াগঞ্জকান্ডে ১২ ঘন্টা উত্তরবঙ্গ বনধে ভালো প্রভাব পড়ল জেলাজুড়ে। সকালের দিকে সরকারি বাস চলতে দেখা গেলেও বেসরকারি বাসে দেখা যায়নি। এই বন্ধের জেরে খোলেনি কোনও দোকানপাট। রায়গঞ্জের মোহনবাটি বাজার, দেবীনগর বাজার, লাইন বাজার ও গোসালা বাজারঘাটও বসেনি। বনধ সমর্থকেরা রাস্তায় না নামলেও বনধ বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা রাস্তায় নেমেছে।
উল্লেখ্য, বুধবার অধিকরাতে কালিয়াগঞ্জ থানার রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদগাঁ গ্রামে বিজেপি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মনকে গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশ বাঁধার মুখে পড়েছিল। বিষ্ণু বর্মনকে বাড়িতে না পেয়ে তার বাবা ও তার বোন-জামাইকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার মানুষের পাশাপাশি বিষ্ণু বর্মনের ভাই মৃত্যুঞ্জয় বর্মন পুলিশকে বাঁধা দেয়। সেই সময় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় মৃত্যুঞ্জয় বর্মন নামে এক যুবকের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে ওঠে। ভোরেই তার মৃতদেহ ময়নায়দন্তের জন্য রায়গঞ্জ গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে আনা হয়। পুলিশের গুলিতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় দেহ ম্যাজিষ্ট্রেট উপস্থিতি এবং ভিডিও গ্রাফি করা হয়। এছাড়াও ময়নাতদন্তের আগে মৃতদেহ সিটি স্ক্যান করানো হয় বলেও জানা গেছে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। সন্ধ্যার পরে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃতদেহটি তার গ্রামে গিয়ে পৌঁছয়।
বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী শিলিগুড়ি মোড়ে রাধিকাপুরে বিজেপি কর্মি মৃত্যুঞ্জয় বর্মনকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে রায়গঞ্জ শিলিগুড়ি মোড়ে ধর্ণায় বসেছিলেন। ধর্ণা প্রত্যাহার করে শুক্রবার রাজবংশী এবং আদিবাসীদের উপর লাগাতর অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতেই উত্তরবঙ্গে ১২ ঘন্টা বনধের ডাক দেন সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। কালিয়াগঞ্জে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় আরও ১৯ জনকে গ্রেফতার করে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। ধৃতদের বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। কালিয়াগঞ্জ থানায় পুলিশের উপর হামলা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে।
উত্তর দিনাজপুর থেকে উত্তম পালের রিপোর্ট টাইমস ফোর্টিন বাংলা।