সম্প্রতি অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল-এর তরফ থেকে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, চলতি বছরে বিশ্বে নতুন করে ২৬ কোটি ৩০ লক্ষের বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মুখে পড়তে পারেন। শুধু এই বিষয় নিয়েই নয়, এর পাশাপাশি আরও নানা বিষয়ের রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল-এর তরফ থেকে।
অক্সফ্যাম-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের এই বিপুল সংখ্যক মানুষের দারিদ্র্যের মুখে পড়ার কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে করোনাকে। কোভিডের সময়ের সংকট, উপার্জনের বৈষম্য, খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি এসব নানা কারণে ভারতে দারিদ্র্যতার সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, দেশে প্রত্যেক ৩৩ ঘণ্টায় ১০ লক্ষ মানুষের ক্ষেত্রে এই সংকট দেখা দিতে পারে।
উল্লেখ্য, পাশাপাশি এই রিপোর্টে বলা হয়েছে লিঙ্গবৈষম্যের কথা। করোনা মহামারির আগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নারী এবং পুরুষের আয়ের ব্যবধান মিটতে প্রায় ১০০ বছরের মতো সময় লাগবে। এখন করোনার পরবর্তী সময়ের পরিসংখ্যান বলছে, সে আয়ের ব্যবধান মিটতে এবার প্রায় ১৩৬ বছর বছর লেগে যাবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, কোভিড পরিস্থিতির কারণে পুরুষদের তুলনায় বেশি কাজ হারিয়েছেন মহিলারা।
অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল-এর তরফে প্রকাশ করা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, পর্যটন ক্ষেত্রও রীতিমতো বিপাকে পড়েছে কোভিডের জেরে। এর প্রভাব পড়েছে মহিলাদের পেশার জগতেও। রিপোর্ট বলছে, গোটা বিশ্বের সার্বিক অবস্থা এমনটাই। কিন্তু, ভারতে এর প্রভাব কেমন, তাও বলা হয়েছে রিপোর্টে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২০০০ সালের পর থেকে ভারত দারিদ্র্যের পরিমাণ হ্রাসের চেষ্টা করছে। এর আগে ২০০৪ সালে দেশের জনসংখ্যার নিরিখে ৩৭.২ শতাংশ মানুষ ছিলেন দারিদ্র্য সীমার নিম্নে।
সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে তা এসে দাঁড়ায় ১৩.৬ শতাংশে। কিন্তু, এরপরেও ভারতে প্রত্যেক বছরে সাধারণ মানুষের রোজগার একটু হলেও বেড়েছে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে গেল করোনার প্রকোপে। এর ফলে কাজ হারিয়েছেন দেশের বহু সাধারণ মানুষ। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠারও চেষ্টা করছে ভারত। তবে, ভারতে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রাথমিক সুবিধা পাওয়া এখন দায় হয়ে পড়েছে। সেই অসুবিধেগুলো মেটাতে পারলে আগামী দিনে ভারতে অর্থ বৈষম্যের হারও ধীরে ধীরে কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।