শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন রনিল বিক্রমসিংহ। অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিক্ষোভের জেরে বর্তমানে টালমাটাল অবস্থা শ্রীলঙ্কার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাক্ষ নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী ওয়ালুকারমা মন্দিরে যান বলে সূত্রের খবর। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাক্ষর সঙ্গে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক সারেন তিনি। এরপরই বিক্রমসিংহের দল নিশ্চিত করে যে তিনিই হতে চলেছেন দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এবার শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে বাঁচানোর দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের। প্রধানমন্ত্রী রনিল ছিলেন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির প্রধান। দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারও রয়েছে তাঁর। এর আগেও তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেছিলেন। বর্তমানে সংসদীয় হাউসে তাঁর দলের মাত্র একটি আসন রয়েছে। এর আগে গত ২০১৮ সালে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
শ্রীলঙ্কার এই নতুন প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৯ সালের ২৪ মার্চ কলম্বোতে। তাঁর বাবা ছিলেন সুপরিচিত একজন আইনজীবী এবং বেশ ধনী পরিবার ছিল তাঁদের। তিনি আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন সিলন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করেন। ৭৩ বছর বয়সী এই ইউএনপি নেতার ব্যাপক আন্তর্জাতিক সংযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁকে একজন দক্ষ আলোচক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
প্রসঙ্গত, মনে করা হচ্ছে শ্রীলঙ্কার এই চরম খারাপ পরিস্থিতিতে রনিল বিক্রমসিংহকে প্রধানমন্ত্রী করায় তাঁর সামনে একটি বড়সড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়ে গেল। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে বাঁচানো। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার অবস্থা এতটাই বেহাল যে, ঋণ শোধ করতে হলেও তার জন্য তাদের ঋণ নিতে হবে। এছাড়াও, রাজনৈতিক বিক্ষোভের কারণেও শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক হিংসার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু হিংসা বিক্ষোভই নয়, ক্ষতি হচ্ছে সরকারি সম্পত্তিরও। এমতাবস্থায় আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনারও এক বড় চ্যালেঞ্জ নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য।
উল্লেখ্য এদিন, নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া একটি ট্যুইট করে বলেন, “নতুন নিয়োজিত হওয়া প্রধানমন্ত্রীকে আমার অশেষ শুভেচ্ছা। উনি এই অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে চলা শ্রীলঙ্কাকে সংকটের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি এই বড় লড়াইয়ে সফল হোন, এমনই প্রার্থনা করি।”